প্রতীকী ছবি।
স্কুলে স্কুলে এবং আশেপাশে নজরদারি তো চলবেই। সেই সঙ্গে এ বার তামাক সেবন না-করার শপথ নিতে হবে স্কুলপড়ুয়াদের। আগামী ২ জানুয়ারি, বই দিবসের অনুষ্ঠানে এই অঙ্গীকারের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে স্কুলে স্কুলে সেই নির্দেশের সঙ্গে শপথবাক্যও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শপথবাক্যটি এই: ‘আমি ভাল ভাবে বেঁচে থাকার অঙ্গীকার করছি এবং তাই আমি কোনও দিনই তামাক স্পর্শ করবো না এবং অন্যদেরও তামাক থেকে দূরে থাকার জন্য বলবো।’
কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্কুল এবং তার আশেপাশে তামাক সেবনের বিরুদ্ধে কিছু দিন আগে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছিল স্কুলশিক্ষা দফতর। তামাক সেবনের বিরুদ্ধে এ বার উত্তর ২৪ পরগনার স্কুলগুলিকেও কড়া হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা। শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের নিয়ে নজরদার কমিটিও তৈরি করতে বলা হয়েছে। তামাকজাত দ্রব্য সেবন প্রতিরোধে ২০০৩ সালের আইন (কোটপা) যথাযথ ভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই কমিটিকে।
আইন অনুযায়ী স্কুলের ১০০ মিটারের মধ্যেও সিগারেট, বিড়ি-সহ যাবতীয় তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বা সেবন করা আইনত দণ্ডনীয়। যদিও সবটাই খাতায়-কলমে। তাই জেলা ধরে ধরে তামাক সেবনের বিরুদ্ধে বারবার কর্মসূচি নিতে হচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতরকে। মে মাসে এই নিয়ে বিকাশ ভবনে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনার, সচিব-সহ পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে সব জেলা স্কুল পরিদর্শকের বৈঠক হয়। নির্দেশ না-মানলে স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উঠে এসেছিল সেখানেই। তার পরে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুলগুলির ক্ষেত্রে কড়া মনোভাব নেয় ওই দফতর। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর (মাধ্যমিক) সূত্রের খবর, পুজোর পরেই জেলাশাসকের দফতরের উদ্যোগে বাছাই করা কিছু স্কুলকে নিয়ে এই বিষয়ে কর্মশালা করা হয়েছিল। তার পরে জেলা ও ব্লক স্তরে তামাক সেবন বিরোধী কমিটি গড়া হয়েছে।
জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছ থেকে নজরদার কমিটি গড়ার নির্দেশ গিয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে। ওই কমিটিতে থাকবেন এক জন শিক্ষক। থাকবে অষ্টম শ্রেণি এবং তার থেকে উঁচু শ্রেণির তিন পড়ুয়া। কোনও শিক্ষক বা কর্মী স্কুলে ধূমপান বা তামাক সেবন করছেন কি না, দেখবে সেই কমিটি। স্কুল-চত্বরের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনও দোকান থেকে যাতে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা না-হয়, তা দেখার দায়িত্ব ওই কমিটির। গেটের বাইরে সাইনবোর্ড বা ফেস্টুনে তামাক-বিরোধী বার্তা দেওয়ারও ব্যবস্থা করবে তারা। এই কাজে ব্লক স্তরের কমিটির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নজরদার কমিটিকে।