—ফাইল চিত্র।
বন্দরে মালগাড়ির চালকদের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তার জেরেই মঙ্গলবার দিনভর শ্রমিক বিক্ষোভ চলল হলদিয়া বন্দরে। সেই বিক্ষোভে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে হাত মিলিয়েছে আইএনটিটিইউসি, সিটু, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ-সহ ৭টি শ্রমিক সংগঠন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে লোকো ইঞ্জিন চালক-সহ দু’শোরও বেশি স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী অবস্থান শুরু করেন হলদিয়া বন্দরে। ব্যাহত হয় মাল আনা-নেওয়ার কাজ। পরিস্থিতি সামাল দিতে খড়্গপুরের টাটা মেটালিক্স থেকে ইঞ্জিন আনা হয়। তবে সে কাজেও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুর্গাচক থানা থেকে পুলিশ বাহিনী গেলেও বিশেষ সুরাহা হয়নি। খড়্গপুর-সহ বিভিন্ন স্টেশনে বন্দরমুখী মালগাড়িগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে।
সন্ধ্যার পরে অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে আইএনটিটিইউসি-র জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার এবং ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের নেতা প্রবীরকুমার বিজলি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকেরা দ্রুত কাজে যোগ দেবেন।’’ আর হলদিয়া বন্দরের ট্রাফিক ম্যানেজার স্বপনকুমার সাহারাইয়ের মন্তব্য, ‘‘লোকো ইঞ্জিন বিভাগে লোক কমানোর প্রস্তাব অনেক দিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু কর্মীরা মানতে নারাজ। আপাতত একটা মীমাংসা হয়েছে।’’
২০১২ সালে এবিজি নামে এক সংস্থাকে দিয়ে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ চালুর চেষ্টা হয়েছিল বন্দরে। ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় শ্রমিকদের লাগাতার আন্দোলনে হলদিয়া ছাড়তে বাধ্য হয় এবিজি। লোকো ইঞ্জিন চালকদের আন্দোলনের পিছনেও রয়েছে সেই আশঙ্কা।
হলদিয়া বন্দর সূত্রে খবর, সোমবার বন্দর কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে জানান, ৬ জনের বদলে লোকো ইঞ্জিন পিছু ৪ জন করে শ্রমিক কাজ করবেন। বাকিদের বন্দরের অন্য বিভাগে কাজ দেওয়া হবে। এর পরই ক্ষোভ ছড়ায় ১৩৬ জন লোকো ইঞ্জিন চালক এবং ৬০ জন অস্থায়ী কর্মীর মধ্যে। হলদিয়া বন্দরে সিটু-র নেতা বিমানকুমার মিস্ত্রি বলেন, ‘‘বন্দর কর্তৃপক্ষ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতি ইঞ্জিন থেকে দু’জনকে বাদ দিতে চাইছেন। তা মানা যায় না।’’ পরে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, তাদের কথা মেনে লোকো ইঞ্জিন পিছু ৫ জন করে কর্মীকে ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর এক জন থাকবেন অতিরিক্ত হিসেবে। এই সিদ্ধান্ত মানা না-হলে ফের আন্দোলন হবে।