মোবাইল রুখতে দেহ তল্লাশি কারাকর্মীদের

ডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্তের লিখিত নির্দেশ, বহিরাগত ও বন্দিদের আত্মীয়স্বজন তো বটেই, জেলকর্মীদেরও দেহ তল্লাশি হচ্ছে। জেলে কর্তব্যরত সমস্ত কর্মী, এমনকী চিফ কন্ট্রোলারকেও তল্লাশির আওতায় রাখা হয়েছে। তল্লাশি করছে পুলিশ। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘জেল পরিচালনার মূল দায়িত্ব সুপারিনটেনডেন্টের বলে তাঁকে তল্লাশির বাইরে রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

সর্ষের থেকে ভূত আলাদা করার চেষ্টা চলছিল অনেক দিন ধরেই। কারণ, কারাকর্তারা এক রকম নিশ্চিত ছিলেন, কর্মীদেরই একাংশ মোটা টাকার বিনিময়ে জেলে বন্দিদের হাতে মোবাইল ও নেশার বস্তু পৌঁছচ্ছেন। কিন্তু কেউ ধরা পড়ছিলেন না। জেলে সিসিটিভি বসানো হয়। তাতেও কাজ হয়নি। মরিয়া কর্তারা সম্প্রতি দেহতল্লাশির নিদান দিয়েছেন।

Advertisement

ডিজি (কারা) অরুণকুমার গুপ্তের লিখিত নির্দেশ, বহিরাগত ও বন্দিদের আত্মীয়স্বজন তো বটেই, জেলকর্মীদেরও দেহ তল্লাশি হচ্ছে। জেলে কর্তব্যরত সমস্ত কর্মী, এমনকী চিফ কন্ট্রোলারকেও তল্লাশির আওতায় রাখা হয়েছে। তল্লাশি করছে পুলিশ। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘জেল পরিচালনার মূল দায়িত্ব সুপারিনটেনডেন্টের বলে তাঁকে তল্লাশির বাইরে রাখা হয়েছে। এর পরেও জেলের ভিতরে মোবাইল বা নেশার বস্তু পাওয়া গেলে দায় এড়াতে পারবেন না সুপারিনটেনডেন্ট।’’

ডিজি-র নির্দেশে কারাকর্মী সংগঠনগুলির মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধলেও এই দ্বিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় ও মাঝারি কারাগারে রয়েছে বলে জানাচ্ছেন নবান্নের কর্তারা। এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘তিহাড়ে তামিলনাড়ুর স্পেশ্যাল পুলিশ ফোর্স তল্লাশি করে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, কর্নাটক, রাজস্থান ও অন্ধ্রপ্রদেশ আগেই কারাকর্মীদের তল্লাশির দায়িত্ব পুলিশের হাতে সঁপে দিয়েছে।’’ পশ্চিমবঙ্গে অনেক দেরিতে হলেও তা হচ্ছে। গত ছ’মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জেল থেকে আড়াইশোর বেশি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। জেলের গেটে সিসিটিভি লাগানো হয়েছিল। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ক্যামেরার মুখ কেউ অন্য দিকে ঘুরিয়ে রাখছে।

Advertisement

প্রথমে কলকাতার প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগার, কলকাতার বাইরে দমদম, ব্যারাকপুর, হুগলি ও হাওড়া জেলে নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার হওয়ায় সেখানে দাগি বন্দির সংখ্যা বেশি। সম্প্রতি তদন্তে ধরা পড়ে, মোবাইল পৌঁছনোর বিনিময়ে সেখানকার তিন কর্মীকে মন্দারমণিতে তিন দিন থাকাখাওয়ার খরচ দেন এক বন্দি।’’ ব্যারাকপুর, হুগলি ও হাওড়া শিল্পাঞ্চলে টাকার প্রলোভন বেশি। তাই গোড়াতে ওই তিন জেলেই দেহতল্লাশি শুরু করতে বলা হয়েছে। দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের এক সপ্তাহ অন্তর বদলে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন