লরির ধাক্কায় প্রতিবন্ধী হয়ে পড়া এক তরুণীকে লাখ দেড়েক টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সুদ-সহ ক্ষতিপূরণের অঙ্কটা বেড়ে হয়ে গেল প্রায় তিন গুণ।
আলিপুরের মোটরযান দুর্ঘটনা সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনাল বলেছিল, ওই তরুণীকে ক্ষতিপূরণ পাবেন এক লক্ষ ৪২ হাজার টাকা। হাইকোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিমা কোম্পানির কাছ থেকে ওই তরুণী পাবেন তিন লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গেই সুদ-সহ বকেয়া টাকা মেটাতে হবে বিমা সংস্থাকে।
জয়শ্রী মল্লিক নামে বসিরহাটের মণিমারি গ্রামের ওই তরুণী ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে লরির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। তাঁর আইনজীবী কৃশানু বণিক শুক্রবার জানান, দুর্ঘটনার পরে তাঁর মক্কেলের চিকিৎসা হয় আরজি কর হাসপাতালে। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় চিকিৎসকেরা তাঁকে ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতার শংসাপত্র দেন। সেই শংসাপত্র দেখিয়ে ২০০৯ সালে ক্ষতিপূরণ দাবি করে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ওই তরুণী। বিমা কোম্পানি তখন ট্রাইব্যুনালে জানায়, জয়শ্রীর স্থায়ী কোনও রোজগার নেই। বছরে তাঁর রোজগার মেরেকেটে ১৫ হাজার টাকা। তার ভিত্তিতেই এক লক্ষ ৪২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: হাজির সুব্রতও, এর পরে শুভেন্দু
ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চলতি বছরে হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন জয়শ্রী। গত ২৭ জুলাই সেই মামলার শুনানি ছিল।
তরুণীর আইনজীবী কৃশানু উচ্চ আদালতে সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেল প্রাণিবিদ্যায় স্নাতক। দুর্ঘটনার আগে থেকেই তিনি বাড়িতে ছাত্রছাত্রী পড়াতেন। সেই সুবাদে মাস গেলে হাজার ছয়েক টাকা রোজগার ছিল তাঁর। ক্ষতিপূরণের টাকা আরও বাড়ানোর জন্য ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান তিনি। বিমা সংস্থার আইনজীবী সুচরিতা পালের কাছে ডিভিশন বেঞ্চ তখন জানতে চায়, ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কত হওয়া উচিত।
কৃশানু জানান, বিমা সংস্থার কৌঁসুলি বিষয়টি আদালতের উপরে ছেড়ে দেন। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকের রোজগার কমপক্ষে মাসিক তিন হাজার টাকা হওয়া উচিত। ছাত্র পড়িয়ে জয়শ্রী মাসে গড়ে ছ’হাজার টাকা রোজগার করতেন। তাই বিমা সংস্থার উচিত তাঁকে তিন লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া। ২০০৯ থেকে বার্ষিক সাড়ে ৭% হারে সুদ-সহ বকেয়া টাকা দিতে হবে। এক মাসে ক্ষতিপূরণ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।