প্রেমিকার অন্য সম্পর্ক, রাগে অ্যাসিড ছুড়ল যুবক

অ্যাসিড হামলায় দাঁড়ি পড়ছে না। নিশানাতেও ফের মহিলা। রবিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার একটি গ্রামের এক বিধবা মহিলাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সেখানকারই এক যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

অ্যাসিড হামলায় দাঁড়ি পড়ছে না। নিশানাতেও ফের মহিলা।

Advertisement

রবিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থানার একটি গ্রামের এক বিধবা মহিলাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সেখানকারই এক যুবকের বিরুদ্ধে। জখম যুবতীর চিকিৎসা চলছে এসএসকেএম হাসপাতালে। দু’চোখে তিনি কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। ঠোঁট আর জিভ পুড়ে যাওয়ায় গিলতে পারছেন না এক ফোঁটা জল। স্যালাইন চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত মন্টু দোলইয়ের সঙ্গে বছর তিরিশের ওই যুবতীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই অ্যাসিড হামলা বলে তদন্তকারীদের অনুমান।

পেশায় সোনার কারিগর মন্টু অবশ্য পলাতক। তবে, মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে পুলিশ জেনেছে, সে কটকে পালিয়েছে। সেখানেই সে কাজ করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সম্প্রতি ওই যুবতীর সঙ্গে অন্য এক যুবকের সম্পর্ক তৈরি হয়। দিন কুড়ি আগে তা জানতে পারে মন্টু। সেই আক্রোশেই ছক কষে কটক থেকে এসে মন্টু অ্যাসিড হামলা চালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ওই যুবতী বলেন, ‘‘ওকে বিশ্বাস করতাম। ও যে এটা করতে পারবে ভাবিনি।’’ যুবতী মুখ স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

অ্যাসিড হামলা ঘাটালে নতুন নয়। ঘাটাল-দাসপুরের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে সোনার ব্যবসায়ী ও কারিগরদের বাস। ফলে, সোনার কাজে ব্যবহৃত অ্যাসিড এখানে সহজলভ্য। অ্যাসিড বিকিকিনির ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয় না বলেও অভিযোগ উঠছে। আর এ বারের ঘটনায় অভিযুক্ত মন্টু নিজেই সোনার কারিগর। পুলিশের ধারণা, অ্যাসিড তার হাতের নাগালেই ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলে ও শাশুড়ির সঙ্গে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন ওই যুবতী। রবিবার সন্ধ্যায় যুবতী বাড়িতেই ছিলেন। মন্টু তাঁকে ফোন করে বাইরে ডাকে। যুবতী বাড়ি থেকে বেরোলে মন্টু তাঁর মাথায় অ্যাসিড ঢেলে দিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। জখম ওই যুবতীকে পড়শিরাই প্রথমে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থা খারাপ হওয়ায় রাতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। তাঁর শাশুড়ি বলেন, “বৌমার চিৎকার শুনে বাইরে গিয়ে দেখি ও যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বৌমাই মন্টুর নাম বলে।”

মহিলার স্বামীও সোনার কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে মন্টুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় মহিলার। মন্টুও বিবাহিত। গ্রামের বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে। তবে কটক থেকে গ্রামে ফিরলে নিজের বাড়িতে না গিয়ে মন্টু ওই যুবতীর কাছে যেত। এ নিয়ে মাস খানেক আগে স্ত্রীর সঙ্গে মন্টুর অশান্তিও হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন