ছবি: সংগৃহীত।
দিন দশেক ধরে জ্বরে ভুগছিল বছর তেরোর ছেলেটি। বারবার নিয়ে যাওয়া হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ভর্তি করেননি ডাক্তারেরা। অভিযোগ, রক্ত পরীক্ষাও করানো হয়নি। ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ছেলের মৃত্যুর পরে ধুন্ধুমার বাধল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রবিবার আউশগ্রামের বননবগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে ক্ষোভের মুখে পড়েন ব্লক প্রশাসন, পুলিশের আধিকারিকেরাও। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে জনতা ইট-পাটকেল ছোড়ায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েন তাঁরা। ঘণ্টা চারেক পরে বর্ধমান থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
আউশগ্রামের বাঘড়াই গ্রামের বাসিন্দা, নবম শ্রেণির ছাত্র মহম্মদ হোসেন মোল্লাকে (১৩) এ দিন সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে মৃত বলে জানানো হয়। তার বাবা মোজাম্মেল হক মল্লিক জানান, তিনি দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রই ভরসা। ২৩ নভেম্বর ছেলে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘দশ দিনে বারবার ছেলেকে নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছি। ডাক্তার আমাদের ভরসা দিয়েছিলেন। তাহলে আমার ছেলে বাঁচল না কেন?’’
মৃতের দিদিমা হোসেনারা বেগমের অভিযোগ, ‘‘বারবার জ্বর এলেও ডাক্তার রক্ত পরীক্ষা করাননি। যখন গিয়েছি দু’টি ট্যাবলেট আর সর্দির সিরাপ দিয়েছেন। শনিবারও তাই দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলা হয়।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কাজল মিত্র বলেন, ‘‘আমার কখনও মনে হয়নি রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।’’ এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকদের ঘেরাও করে রাখা হয়। সামনে গুসকরা-মোরবাঁধ রাজ্য সড়কও বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ করে জনতা। খবর পেয়ে আউশগ্রাম ১ বিডিও চিত্তজিৎ বসু ও পুলিশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে তাঁরাও ঘেরাও হন। বিডিও বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এর পরেই গোলমাল বাধে।