প্রতীকী ছবি।
নাবালিকার সঙ্গে সহবাস এবং তার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে ওই নাবালিকা, এই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। শিশু যৌন নির্যাতন বিরোধী (পকসো) আইনে মামলা হওয়ায় জামিনও পাননি অভিযুক্ত যুবক। কিন্তু অভিযোগকারিণীর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে ডিএনএ পরীক্ষায় প্রকাশ, যুবকের সঙ্গে সন্তানের রক্তের সম্পর্ক নেই। তার পরেই আদালত জামিন দিয়েছে ওই যুবককে। তবে প্রায় দু’বছর জেলেই কেটেছে তাঁর।
শুক্রবার জামিন পান দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির পশ্চিম গোপালগঞ্জের বাসিন্দা গোপাল ঘোষাল। তাঁর কৌঁসুলিদের অভিযোগ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। গোপাল এক সময় কেরলে শ্রমিকের কাজ করতেন। এখন সেই কাজটিও হারিয়েছেন।
২০১৭-র এপ্রিলে ওই নাবালিকার বাবা কুলতলি থানায় জানান, গোপাল তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছে। সে দিনই গোপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধর্ষণ, প্রতারণা ছাড়াও পকসো আইনে মামলা হয়। জয়নগর হাসপাতালে অভিযুক্ত যুবক ও নাবালিকার পরীক্ষা হয়। তাতেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা জানা যায়।
পুলিশ মাস কয়েকের মধ্যে চার্জশিট জমা দেয়। পরে গোপালের দুই কৌঁসুলি সুশীল চক্রবর্তী এবং হরিশঙ্কর চক্রবর্তী আদালতের কাছে অভিযোগকারিণী ও তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণের ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানান। কিন্তু সরকারি আইনজীবী বিরোধিতা করে জানান, গর্ভাবস্থার অন্তিম পর্যায়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা যাবে না। সেই যুক্তি মানে আদালত।
২০১৭-র সেপ্টেম্বরে গোপালের বিচার শুরু হয়। অক্টোবরে ফের হাইকোর্টে ডিএনএ পরীক্ষার আর্জি জানান গোপাল। তত দিনে অভিযোগকারিণীর সন্তান হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী তার অনুমতি দেন। ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের রক্তের নমুনা সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সম্প্রতি আসা তার রিপোর্ট শুক্রবার পড়ে শোনান আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক পরেশচন্দ্র প্রামাণিক। জানা যায়, ওই সন্তানের বাবা গোপাল নন। তার পরেই তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়।
কিন্তু তাঁকে জেল তো খাটতে হল! যা নিয়ে সুশীলবাবু বলছেন, ‘‘তদন্ত সঠিক হলে জেলে থাকতে হত না।’’ ছেলের জামিনে খুশি পরিবার। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী এমন অভিযোগ জানাল কেন, সেই রহস্য থাকছেই।