ভাঙচুর করা হয়েছে অভিযুক্তের বাড়ি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
বাড়ির পাশেই একটি বহুতলের ঢালাইয়ের কাজ করছিল সে। আচমকাই প্রতিবেশীর গুলিতে প্রাণ গেল বছর আঠারোর যুবক সঞ্জয় লোহারের। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জগদ্দলের শাস্ত্রীনগর এলাকায়। ঢালাইয়ের কাজের জন্য বালি-সিমেন্ট মেশানোর সময় হঠাৎই প্রতিবেশী সোমনাথ দাশের পাইপগান থেকে ছোঁড়া গুলিতে গুরুতর জখম হন সঞ্জয়। তাঁকে প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতির কারণে তাঁকে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত সোমনাথ দাশ।
শাস্ত্রীনগরের বাসিন্দা সঞ্জয়ের বাবা অজয় লোহার পেশায় রিক্সাচালক। সোমনাথের বাড়িও সঞ্জয়ের বাড়ির থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। অজয়বাবুর সেজো ছেলে সঞ্জয় রাজমিস্ত্রীর জোগানের কাজ করতেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বুধবার নিজের বাড়ির সামনেই রাজমিস্ত্রীর কাজ করছিল সঞ্জয়। এই সময়ই সোমনাথ সেখানে এসে আচমকাই নিজের পাইপগান থেকে গুলি করে।
এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সঞ্জয়কে বাড়িতে খেতে ডেকেছিলেন মা লক্ষ্মীরানিদেবী। সেই সময় সঞ্জয় বাড়ি ফেরেন। কিন্তু না খেয়েই সাইকেল নিয়ে আবার বেড়িয়ে যান। মা লক্ষ্মীদেবী জানান, সাইকেল নিয়ে পঞ্চাননতলা ঘাটের দিকে গিয়েছিলেন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসেন। কিন্তু বাড়িতে না ঢুকে ফের কাজের জায়গাতেই চলে যান সঞ্জয়। এর পরেই বাড়ির সামনে হট্টোগোলের শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে লক্ষ্মীদেবী দেখেন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাঁর ছেলে। এই ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা সোমনাথের বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালায়। এই সময়েই পালিয়ে যায় সোমনাথ। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় জগদ্দল থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকার গুন্ডা হিসাবে পরিচিত সোমনাথের নাম এর আগেও পুলিশের খাতায় উঠেছিল। কিছু দিন আগেই শ্লীলতাহানির অভিযোগে জেলও খেটেছে সোমনাথ। কিন্তু সঞ্জয়ের সঙ্গে তাঁর কী নিয়ে শত্রুতা চলছিল তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। সঞ্জয়ের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু দিন আগে সঞ্জয়ের দাদা সুজয় লোহারের সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে গোলমাল বেঁধেছিল সোমনাথের। তবে শেষ পর্যন্ত তা মিটেও যায়। কিন্তু সোমনাথ কেন হঠাৎ সঞ্জয়কে গুলি করল, তাঁর কাছে পাইপগানই বা এল কোথা থেকে তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ।