আজ তিনি কংগ্রেস নেতা বা সাংসদ নন। একমুখ দাড়িতে তিনি সদ্য মাতৃহারা সন্তান। ১৩ নম্বর তালকাটোরা রোডের বাড়িতে মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই সমস্ত নিয়ম কঠোর ভাবে মেনে চলছেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। সারা দিনে হবিষ্যির এক মুঠো অন্ন ছাড়া আর কিছুই মুখে তুলছেন না তিনি। এমনকী, চা খাওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাবার কথায় ফের চা খাওয়া শুরু করেছেন। মাটিতে কম্বল পেতে শুচ্ছেন। হিন্দু বাহ্মণসন্তানের সব রকম নিয়ম কঠোর ভাবে মেনে চলেছেন। এমনককী, ধরাও নিয়েছেন। নিয়মিত পুজোঅর্চনাও করছেন।
মা’কে ভালবাসতেন খুব। সব সন্তানের মতো অভিজিৎবাবুরও ছোটবেলার আশ্রয় ছিল মায়ের আঁচল। রাজনীতিতে বা চাকরি জীবনে যা-ই হোন না কেন, মায়ের কাছে ছিলেন আদরের ‘বাবু’। বাবা ব্যস্ত ছিলেন দেশের রাজনীতি সামলাতে। মা-ই মেটাতেন ছেলেমেয়ের সব রকম আবদার। তাই মায়ের সঙ্গেই বেশি ঘনিষ্ঠতা।
গত ১৮ অগস্ট মারা যান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়। শেষকৃত্য না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন মায়ের মৃতদেহের পাশে। দেশ-বিদেশের ভিভিআইপি-দের সামলিয়েছেন চোখের জল লুকিয়ে রেখে। সেই চোখের জল বাঁধ মানেনি মায়ের অস্থিবিসর্জনের দিন। হর কি পৌড়ির ঘাটে মায়ের অস্থি বিসর্জন করেন ১৯ তারিখ। তার পর থেকেই চলছে কঠোর নিয়ম পালন।
শুক্রবার, ২৮ অগস্ট শুভ্রাদেবীর পারলৌকিক কাজ। ১৩ নম্বর তালকাটোরা রোডের বাড়িতে অভিজিৎবাবুর বর্তমান বাসভবনেই এই কাজ সম্পন্ন হবে। প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে চলে আসবেন ওই বাড়িতে। উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি, আত্মীয়স্বজন ও অভিজিৎবাবুর নির্বাচনী কেন্দ্র জঙ্গিপুরের বিধায়ক ও বিশিষ্ট অতিথিরা। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব বিধায়ক ও সাংসদও শুক্রবার উপস্থিত থাকবেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। পারলৌকিক কাজ ছাড়া কীর্তনও পরিবেশিত হবে। ভিআইপিদের সবরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নিজের তত্ত্বাবধানেই করছেন অভিজিৎবাবু। তাঁকে সবরকম সাহায্য করছেন তাঁর স্ত্রী চিত্রলেখা।