এক জনের এক ডাকে গায়ক থেকে নেতা হয়েছিলেন। রাজনীতিতে পা দিয়েই মুর্শিদাবাদের মতো শক্ত জেলায় শাসক দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে। সেই ইন্দ্রনীল সেনকেই এক ডাকে মুর্শিদাবাদ থেকে তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে ফিরিয়ে আনলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব এখন থেকে প্রকৃতপক্ষে পালন করবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। তৃণমূল নেত্রী ইন্দ্রনীলকে দায়িত্ব থেকে সরানোর কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেননি। কিন্তু কল্যাণীতে শুক্রবার দলের উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনৈতিক সম্মেলনে ইন্দ্রনীলকে মমতা বলে দিয়েছেন, “মুর্শিদাবাদ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি দেখে নেব।”
তা হলে এখন কী নিয়ে ভাববেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে অধীর চৌধুরীর কাছে পরাজিত ইন্দ্রনীল? মমতার নির্দেশ, তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করতে চেয়ে সোশ্যাল সাইট, ই-মেল বা এসএমএসে আবেদন জানাবেন তরুণ প্রজন্মের যে সব প্রতিনিধি, তাঁঁদের আবেদনপত্র দেখতে রোজ বিকালে দু’ঘণ্টা করে তৃণমূল ভবনে বসতে হবে ইন্দ্রনীলকে। সহকারীও বেছে দিয়েছেন নেত্রী। বলেছেন, “মহুয়াকে (মৈত্র) তোমার সঙ্গে ট্যাগ করে নিও।” রাহুল গাঁধীর ‘আম আদমি কা সিপাহি’ হিসেবে কাজ করে আসার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মহুয়াকে গত কয়েক বছরে নানা ভূমিকায় ব্যবহার করতে চেয়েছেন মমতা। সেই তালিকায় আরও একটি সংযোজন হল এ দিন।
জেলায় জেলায় ব্লক স্তর থেকে কোর গ্রুপ গড়তে বলেছেন মমতা। মুর্শিদাবাদের জন্য এ দিন সম্মেলন মঞ্চ থেকেই যে কোর কমিটির কথা বলেছেন, তাতে হুমায়ুন কবীরের নাম নেই। যাঁর সঙ্গে পর্যবেক্ষক ইন্দ্রনীলের বিবাদ কারও অজানা নয়। সম্মেলনেও এ দিন ঢুকছিলেন না হুমায়ুন। পরে তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে যান ব্রাত্য বসু। মমতার নির্দেশের পরে মুর্শিদাবাদের দলীয় সমীকরণ কোথায় দাঁড়াবে, তা নিয়েই তৃণমূলের অন্দরে কৌতূহল। ইন্দ্রনীল অবশ্য পরে বলেছেন, এমন সিদ্ধান্তের কথা জানা নেই। হুমায়ুন বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্ত। কিছু বলব না।” আর তৃণমূলেরই এক বিধায়কের বিশ্লেষণ, “এখানে মুখে মুখে ওই রকম অনেক কিছুই রোজ পাল্টায়!”