বড়জোড়ার সভায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
রাজ্যে শিল্পায়নে ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করে বারবার শাসকদল তৃণমূলকে একহাত নিয়েছে বিরোধী দলগুলি। লোকসভা ভোটেও একই ইস্যুকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েছে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের শিল্পাঞ্চল বড়জোড়ায় নির্বাচনী জনসভায় এসে রাজ্যে শিল্প নিয়ে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্র বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর-সহ দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীদের পাশে নিয়ে মমতা এ দিন বলেন, “বড়জোড়ায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিট তৈরি হচ্ছে। এখানে ২৬ হাজার কোটি টাকা নতুন করে বিনিয়োগ হচ্ছে। এ ছাড়াও গোটা রাজ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে ডিভিসি।” তিনি আরও জানান, বর্ধমান-বাঁকুড়ার সীমানায় ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব’ গড়া হচ্ছে। ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গড়ছে ‘ইস্কো’। দুর্গাপুর, পানাগড়ে ইন্ডাস্ট্রি গড়া হচ্ছে। পাঁচ লক্ষ মানুষ এখানে চাকরি পাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে শিল্পায়নের কথা শুনেই করতালি দিয়ে ওঠেন উল্লসিত জনতা। এরপর মুখ্যমন্ত্রী ‘যুবশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’র মতো প্রকল্পগুলির সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এনডিএ সরকার, ইউপিএ সরকার সিপিএমকে টাকা ধার দিয়েছে। আর আমাকে সেই টাকা শোধ করতে হচ্ছে। যদি টাকা না কাটত তা হলে একদিনে ২০ লক্ষ ছেলেমেয়েকে কাজ দিতে পারতাম।”
সভার পথে মমতা। মঙ্গলবার দুর্গাপুর থেকে বেরোনোর সময়ে। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিন বড়জোড়া হাইস্কুল মাঠে মমতার সভাকে কেন্দ্র করে ছিল ঠাসা ভিড়। মাঠ সংলগ্ন বাড়ির ছাদ, প্রাচীরেও ভিড় জমিয়েছিল ছিলেন উৎসাহী জনতা। মুখ্যমন্ত্রীর চপার মাঠের উপর উড়তে দেখে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে। মাঠে উপস্থিত বড়জোড়ার ঘুটগোড়িয়ার বাসিন্দা শশধর গরাই, লোকনাথ গরাইরা বলে ওঠেন, “মাঠের কত কাছে উড়ল চপার। এত কাছ থেকে আগে কখনও দেখিনি।” সভা শুরু হওয়ার পর ভিড়ে ঠাসা জনতার ঠেলাঠেলিতে মঞ্চের বাঁ’দিকে সাময়িক উত্তেজনাও ছড়ায়। যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ মাইক্রোফোন নিয়ে জোর গলায় সকলকে শান্ত হতে বলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
নিজের বক্তব্যে বারবার সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপিকে আক্রমণ করতে থাকেন মমতা। এক সময় বলেন, “সিপিএম ভোটে গোল্লা পেয়ে রসগোল্লা খাবে, রসগোল্লা খেলে স্বাস্থ্য ভাল হয়। সভায় আসা কিছু জনতাও বিড়বিড় করে বলেন, “নরেন্দ্র মোদী ব্রিগেডে লাড্ডু খাওয়াবে বলেছিলেন। দিদি সিপিএমকে রসগোল্লা খাওয়াতে চাইছেন। দু’জনেই মনে হচ্ছে খুব মিষ্টি প্রেমী।