এবিজিকে ফেরাতে হলদিয়া বন্দরে নতুন করে নিলাম

ফরাসি সংস্থা এবিজি-র ছেড়ে যাওয়া হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে যন্ত্রনির্ভর পণ্যখালাসের জন্য নতুন করে দরপত্র চাইল কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ। তবে এ বারে পণ্য খালাসের কাজ দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছে তারা। ওই দুই বার্থে জাহাজ থেকে বার্থে এবং বার্থ থেকে বন্দরের বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’ভাগে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০২
Share:

ফরাসি সংস্থা এবিজি-র ছেড়ে যাওয়া হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে যন্ত্রনির্ভর পণ্যখালাসের জন্য নতুন করে দরপত্র চাইল কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষ। তবে এ বারে পণ্য খালাসের কাজ দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছে তারা। ওই দুই বার্থে জাহাজ থেকে বার্থে এবং বার্থ থেকে বন্দরের বাইরে পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’ভাগে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এবিজি-র ব্যবহৃত পাঁচ বছরের পুরনো ক্রেনগুলিও যাতে পণ্য খালাসে কাজে লাগানো যায়, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। দু’বছর আগে হলদিয়া ছেড়ে চলে গেলেও এবিজি-র ৬টি মোবাইল হারবার ক্রেন সেখানে রয়ে গিয়েছে।

Advertisement

বন্দর সূত্রের খবর, গত ৭ জানুয়ারি কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী হলদিয়ায় এবিজি-র ফেলে যাওয়া বার্থ দুটিতে পণ্য খালাস দ্রুত চালু করার নির্দেশ দিয়ে যান। পাশাপাশি ফরাসি ওই সংস্থার সঙ্গে যাবতীয় বিবাদ মিটিয়ে তাদের হলদিয়ায় ফেরানোর ব্যবস্থাও করতে বলেন। সেই মতো কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁ এবিজি এবং ফরাসি যৌথ উদ্যোগের সংস্থা এলডিএ-কে কলকাতায় ডেকে বৈঠকে বসেছিলেন। তাদের হলদিয়ায় ফেরানোর ব্যাপারে বেশ কিছু বিকল্প প্রস্তাবও বন্দরের তরফে দেওয়া হয়েছে।

বন্দরের এক সূত্র জানাচ্ছে, ফরাসি সংস্থা এলডিএ হলদিয়ায় ফেরার প্রস্তাব একেবারে যে ফিরিয়ে দিয়েছে, তা নয়। সেই কারণে আলোচনার পরেই ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া দু’ভাগে ভেঙে দরপত্র চাওয়া হয়েছে। বন্দরের চেয়ারম্যান বলেন, “আপাতত যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাসের কাজ দু’ভাগে ভাঙা হচ্ছে। এর ফলে অনেকেই কাজ করতে এগিয়ে আসবেন। এবিজি-র ফেরার পথও তৈরি হল। নিজেদের ফেলে যাওয়া মোবাইল হারবার ক্রেন দিয়েই তারা পণ্য খালাসের কাজ করতে পারবে।”

Advertisement

হলদিয়ার ২ এবং ৮ নম্বর বার্থের পাশাপাশি অন্য সব বার্থেও পণ্য খালাসের দর নিলামের মাধ্যমে ঠিক করার কাজ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এ নিয়ে বন্দর যে দরপত্র ডেকেছিল তাতে বলে দেওয়া হয়, পণ্য খালাসের জন্য সর্বোচ্চ টনপ্রতি ১২০ টাকা আদায় করতে পারবে। এর মধ্যে থেকে বন্দরকে যে সংস্থা সবচেয়ে বেশি রয়্যালটি দেবে তারাই পণ্য খালাসের লাইসেন্স পাবে। সেই প্রক্রিয়ায় তৃণমূলের এক রাজ্য সভার সাসংদের সংস্থা প্রতি টনে ১২০ টাকার ফি-এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪.৭৭ টাকা রয়্যালটি দিতে রাজি হয়েছে। এই নিলামে আরও ৭টি সংস্থা অংশ নিয়েছিল। বন্দর সূত্রের খবর, তারাও যদি প্রতি টনে বন্দরকে ১৪.৭৭ টাকা রয়্যালটি দিতে রাজি হয়, তা হলে ওই সংস্থাগুলিকেও পণ্য খালাসের লাইসেন্স দেওয়া হবে।

তবে জাহাজি মহলের একাংশের অভিমত, এ ভাবে পণ্য খালাসের খরচ কমাতে পুরোপুরি সক্ষম হবে না বন্দর কর্তৃপক্ষ। কারণ, বন্দর ২০১১ সালের ট্যারিফ নীতি মেনে এই নিলাম ডেকেছিল। ২০১৪ সালের ট্যারিফ নীতিতে হলদিয়া বন্দরে প্রতি টন পণ্য খালাসের দর ঠিক করা হয়েছে ১৪৩ টাকা। ফলে পুরনো দরে কোনও সংস্থা কাজ করতে সক্ষম হবে না। অর্থাৎ এ বারও বন্দর ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ‘বেসরকারি’ পথে বাড়তি চার্জ নেওয়ার পথ খোলা রইল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন