বিজেপি-র মোকাবিলায় ভবিষ্যতে ফের তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোটের জল্পনা উড়ে বেড়াচ্ছে কোনও কোনও মহলে। পুরুলিয়ার ঝালদার কলেজে এবিভিপি-কে ছাত্র সংসদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে তৃণমূল ও কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের হাত মেলানোয় কি ধরা পড়ল ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত? নিজেদের আসন বেশি থাকা সত্ত্বেও ছাত্র পরিষদকে যে ভাবে কলেজের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদ ছেড়ে দিয়েছে টিএমসিপি, সেই ঘটনা এমন প্রশ্নই জোরালো করছে!
ঝালদার অচ্ছ্রুরাম মেমোরিয়াল কলেজের ছাত্র সংসদ গঠন দেখে বুধবার বিজেপি-র জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এটা তৃণমূলের চরিত্র। রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে কুস্তি, ঝালদায় দোস্তি! এ ভাবে বিজেপি বা এবিভিপি-কে বেশি দিন ঠেকানো যাবে না।” টিএমসিপি-র দখলে থাকা পুরুলিয়ার ৬টি কলেজের মধ্যে সোমবার হাতছাড়া হয়েছে তিনটি। তার মধ্যে বাঘমুণ্ডি কলেজে জয়ী ছাত্র পরিষদ। লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজে ছাত্র সংসদ আরএসএস-প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন এবিভিপি দখল করে। ঝালদার অচ্ছ্রুরাম কলেজে এবিভিপি ২৩টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। টিএমসিপি ৭, ছাত্র পরিষদ ৫ এবং এসএফআই একটি আসন পায়। ফল ঘোষণার পরেই টিএমসিপি জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছিলেন, ঝালদার কলেজে ছাত্র পরিষদকে নিয়ে তারা ছাত্র সংসদ গঠন করবেন। ঘটেছেও তা-ই। দুই ছাত্র পরিষদ হাত মিলিয়ে এবিভিপি-কে পিছনে ফেলেছে। টিএমসিপি ছেড়ে এবিভিপি-তে যোগ দেওয়া ঝালদার ছাত্রনেতা মিঠুন মাহাতোর কটাক্ষ, “আমাদের রুখতে ছাত্র পরিষদের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ টিএমসিপির!” জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর অবশ্য পাল্টা দাবি, “পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্র পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রার্থী দিয়েছিল, টিএমসিপি তাতে সমর্থন করেছে। কারণ, সংসদ গড়ার মতো সদস্য ওদের নেই। তবে জোট গড়া হয়নি।” আবার টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি নিরঞ্জন মাহাতোর বক্তব্য, “সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে ঝালদায় মিলিত ভাবে সংসদ গড়া হয়েছে। কে কোন পদ পেয়েছে, সেটা বিচার্য বিষয় নয়।” প্রসঙ্গত, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে এবিভিপি-র ইউনিট খুলতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এ দিনই নদিয়ার করিমপুর পান্নাদেবী কলেজে তাদের সঙ্গে টিএমসিপি-র সংঘর্ষ বেধেছিল।