কংগ্রেসে আপত্তি কেন, মিসড কল পাচ্ছে ফব

মিস্ড কলেও কংগ্রেসের ভূত! কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে লোকসভা ভোটে লড়তে নেমেছে তারা। কিন্তু বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের দফতরে মিসড কল করে একের পর এক বাম সমর্থক মানুষ জানতে চাইছেন, ভোটের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় আপত্তি কোথায়? বারংবার প্রশ্নে জেরবার ফ ব-কে শেষ পর্যন্ত আশ্বাস দিতে হচ্ছে, ভোটের পরে সত্যিই তেমন পরিস্থিতি হলে বিশেষ বৈঠক ডেকে দলীয় নেতৃত্ব যা বিবেচনা করার, করবেন!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:০৩
Share:

মিস্ড কলেও কংগ্রেসের ভূত!

Advertisement

কংগ্রেস এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে লোকসভা ভোটে লড়তে নেমেছে তারা। কিন্তু বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের দফতরে মিসড কল করে একের পর এক বাম সমর্থক মানুষ জানতে চাইছেন, ভোটের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় আপত্তি কোথায়? বারংবার প্রশ্নে জেরবার ফ ব-কে শেষ পর্যন্ত আশ্বাস দিতে হচ্ছে, ভোটের পরে সত্যিই তেমন পরিস্থিতি হলে বিশেষ বৈঠক ডেকে দলীয় নেতৃত্ব যা বিবেচনা করার, করবেন!

কলকাতায় দলের ইস্তাহার প্রকাশ করতে গিয়ে সম্প্রতি বিশেষ হেল্পলাইন খোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন ফ ব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। বলা হয়েছিল, একটি ফোন নম্বরে (৯০৩৮০৯০৮৮০) মিসড কল করলে ফ ব-র তরফ থেকেই যোগাযোগ করা হবে। ফ ব-র কর্মীরাই ফোন করে প্রশ্নের উত্তর দেবেন। ওই ইস্তাহার প্রকাশের দিনই দেবব্রতবাবু সাফ বলেছিলেন, ভোটের পরে কোনও অবস্থাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। বিজেপি-র তুলনায় কংগ্রেস কম সাম্প্রদায়িক, এমন ভাবনা রাজনৈতিক ভাবে ভ্রান্ত এবং অসার। হেল্পলাইনে মিস্ড কল করে দেবব্রতবাবুর বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বাম জনতা! হেল্পলাইনের রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে, এক সপ্তাহে মিস্ড কল এসেছে চার হাজার ২৯৩টি। নম্বর দেখে ফোন করার পরে ৯০২ জনই প্রশ্ন করেছেন কংগ্রেস নিয়ে। তাঁদের প্রশ্ন, সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট, সীতারাম ইয়েচুরি থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যেরা যখন ভোটের পরে ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্পের স্বার্থে সম্ভাব্য সব দরজা খুলে রাখার কথা বলছেন, বামফ্রন্টের শরিক হয়েও ফ ব-র আপত্তি কোথায়? তা ছাড়া, এই ফ ব-ই গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ভোট দিয়েছিল! দেবব্রতবাবু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরিস্থিতি আলাদা ছিল। এখন ফোনে প্রশ্ন শুনে কী বলছে ফ ব? দলের যুব নেতা সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আমরা বলছি, সিপিএম নেতারা তাঁদের কথা বলছেন। আমাদের দলের অবস্থান ইস্তাহারেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর পরেও কোনও প্রয়োজনে মনোভাব বদল করতে হলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বা তেমন প্রয়োজনে জাতীয় কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

Advertisement

কংগ্রেস ছাড়া আর বাকি প্রশ্ন অবশ্য আসছে স্থানীয় ভিত্তিতে। যেমন, লালগড় থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছে, সিপিএমের প্রার্থী কেন ওই এলাকায় প্রচারে যাচ্ছেন না? কোচবিহার থেকে প্রশ্ন আসছে, ফ ব-র প্রার্থীকে কেন সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে না? নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য উদঘাটনের জন্য ফ ব এর পরে আর কী করবে, তা-ও জানতে চাইছেন কেউ কেউ। দলের কর্মীদেরই একাংশ মিস্ড কল দিয়ে জানাচ্ছেন, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর বা বর্ধমানের মতো জেলায় নেতৃত্ব পরিবর্তন দরকার! তাঁদের আর্জি, রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষকে যেন এই বক্তব্য জানানো হয়। অশোকবাবুর কুশল সংবাদ নিতেও ফোন করছেন কেউ কেউ! এ সবের মধ্যে কংগ্রেস-প্রশ্নেই বেশি মাথা ঘামাতে হচ্ছে হেল্পলাইনের উত্তরদাতাদের! ফ ব-র এক রাজ্য নেতার রসিকতা, “এ তো মনে হচ্ছে, ভোটের পরে বার্তা পাঠাতে কংগ্রেসকে আমাদেরই না মিস্ড কল করতে হয়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন