কোল ইন্ডিয়ার নগদ-নীতিতে রাজ্যে ত্রাহি রব

আজ নগদ, কালও নগদ। কয়লা বিক্রির নতুন নিয়ম করেছে কোল ইন্ডিয়া। আর তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্য সরকারের কোষাগারে। অতীতে ধার-বাকির কারবার যা-ই হোক, ক’মাস আগে কোল ইন্ডিয়া জানিয়ে দিয়েছে, এ বার তারা শুধুমাত্র নগদ অর্থের বিনিময়ে কয়লা বেচবে।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২১
Share:

আজ নগদ, কালও নগদ। কয়লা বিক্রির নতুন নিয়ম করেছে কোল ইন্ডিয়া। আর তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্য সরকারের কোষাগারে।

Advertisement

অতীতে ধার-বাকির কারবার যা-ই হোক, ক’মাস আগে কোল ইন্ডিয়া জানিয়ে দিয়েছে, এ বার তারা শুধুমাত্র নগদ অর্থের বিনিময়ে কয়লা বেচবে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সব রাজ্যকে। সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে দেরি হয়নি। কোল ইন্ডিয়া’র এক কর্তা জানিয়েছেন, এখন কোনও বিদ্যুৎ সংস্থাকে ধারে কয়লা দেওয়া তো হচ্ছেই না, উপরন্তু সংস্থাগুলি কয়লা কেনার জন্য যে টাকা জমা দিচ্ছে, তার ৫০% কেটে রাখা হচ্ছে পুরনো ধারের শোধ হিসেবে। বাকি টাকার কয়লা দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম অবশ্য এ ক্ষেত্রে কিঞ্চিৎ বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। বকেয়া পরিশোধ বাবদ তাদের টাকার ৩০% কেটে বাকি ৭০ শতাংশের কয়লা দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, কোল ইন্ডিয়া এখনও নিগমের কাছে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা পায়। চলতি অর্থবর্ষের শুরুতে অঙ্কটা ছিল ১৭০০ কোটি।

অর্থাৎ, কয়েক মাসের মধ্যেই পুরনো ধারের ৫০০ কোটি মেটাতে হয়েছে। এ দিকে রাজ্যের ভাঁড়ারে এমনিতেই হাঁড়ির হাল। তার উপরে গত কয়েক মাস ধরে নগদে কয়লা কিনতে গিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস উঠেছে। নিগমের এক কর্তা জানিয়েছেন, আপাতত ব্যাঙ্ক-ঋণ নিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। টাকাকড়ির হাল এত করুণ কেন?

Advertisement

নিগম-সূত্রের ব্যাখ্যা: তাদেরও পাওনা বাকি পড়ে থাকায় সঙ্কটের উৎপত্তি। নিগম বিদ্যুৎ বিক্রি করে শুধুমাত্র রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে গড়ে দৈনিক প্রায় ২৮০০ মেগাওয়াট। কিন্তু বণ্টনের ভাঁড়ারেও টানাটানি। সিইএসসি-এলাকা বাদ দিয়ে তামাম রাজ্যে একচেটিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ করেও তাদের বিল বাবদ রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ফলে বণ্টন কর্তৃপক্ষ অনেক ক্ষেত্রে সময় মতো নিগমের পাওনা মেটাতে পারছেন না। নিগমের কাছে তাদের ধার পড়ে থাকছে। যদিও বণ্টনের দাবি, এখন নিগমের বিল তাড়াতাড়ি মেটানো হচ্ছে।

কোলাঘাট, ব্যান্ডেল, বক্রেশ্বর, সাঁওতালডিহি ও সাগরদিঘি পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে নিগমের শুধু কয়লার পিছনে যায় মাসে ৪৪০ কোটি। রাজ্যের দাবি, ২০১১-১২ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে কয়লার দাম বেড়েছে ৪৩%। প্রতি মাসে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান করাটা নিগম-কর্তৃপক্ষের কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক কর্তা জানান, সাশ্রয়ের তাগিদে বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন