কাশ্মীরি বাতাসে ভর করে বঙ্গে আবার শালের শীত

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পারদ চড়তে শুরু করেছিল। রাতের ভ্যাপসা গরম দেখে মনে হচ্ছিল, নতুন বছরের প্রথম মাস পেরনোর আগেই বোধহয় শীত পাততাড়ি গুটোবে। কিন্তু প্রকৃতির মর্জি বোঝে কার সাধ্যি! আবহাওয়ার ভাবগতিক আবার আচমকা বদলে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার আবহবিদেরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, জানুয়ারির শেষাশেষি দক্ষিণবঙ্গে শীত ফের ঘুরে দাঁড়াবে। মাঝ-মাঘের ক’টা দিন শীতের ব্যাটে চার-ছয় না হোক, দু’-তিন রান অন্তত উঠবে বলে তাঁদের আশা। ফলে আবার শাল-চাদর মুড়ি দিয়ে ওম নেওয়ার সুযোগ আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১০
Share:

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পারদ চড়তে শুরু করেছিল। রাতের ভ্যাপসা গরম দেখে মনে হচ্ছিল, নতুন বছরের প্রথম মাস পেরনোর আগেই বোধহয় শীত পাততাড়ি গুটোবে। কিন্তু প্রকৃতির মর্জি বোঝে কার সাধ্যি!

Advertisement

আবহাওয়ার ভাবগতিক আবার আচমকা বদলে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার আবহবিদেরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, জানুয়ারির শেষাশেষি দক্ষিণবঙ্গে শীত ফের ঘুরে দাঁড়াবে। মাঝ-মাঘের ক’টা দিন শীতের ব্যাটে চার-ছয় না হোক, দু’-তিন রান অন্তত উঠবে বলে তাঁদের আশা। ফলে আবার শাল-চাদর মুড়ি দিয়ে ওম নেওয়ার সুযোগ আসছে।

এ মরসুমে শীতের পথে অবশ্য কাঁটার ছড়াছড়ি। কখনও তার সামনে পাঁচিল তুলে দাঁড়িয়েছে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। কখনও বা বাংলাদেশের ঘূর্ণাবর্তের কোপে সে মুখ থুবড়ে পড়েছে। জানুয়ারির শেষেও শীতের রাস্তায় কাঁটা বিছিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের একটি ঘূর্ণাবর্ত। “তার প্রভাবে উত্তুরে হাওয়া বাধা পাচ্ছিল। শীত উধাও হয়ে গিয়েছিল।” জানাচ্ছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।

Advertisement

তা হলে শীত আবার ফিরছে কী ভাবে? আলিপুরের ব্যাখ্যা: ঘূর্ণাবর্তটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দিন কয়েক আগে একটা জোরালো পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কাশ্মীরে ঢুকেছিল। তাতে ওখানে বৃষ্টি-তুষারপাত হয়েছে। ঝঞ্ঝাটি এখন সরে এসেছে উত্তর-পূর্বে। সেটি এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে উত্তরবঙ্গের কিছু তল্লাটে তো বটেই, মুর্শিদাবাদ-বীরভূম-বর্ধমানেরও কোথাও কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা। আবহবিদেরা বলছেন, কাশ্মীরের বরফ-ছোঁয়া বাতাসের প্রভাবে উত্তর ভারতে কড়া ঠান্ডা পড়েছে। সেখান থেকে বয়ে আসা শীতল হাওয়া এ বার বাংলাতেও ঢুকবে।

বস্তুত হাওয়া বদলের আঁচ এ দিন বিকেলেই মালুম হয়েছে মহানগরে। ভিজে ভিজে ঠান্ডা ভাব। সন্ধের দিকে শীতল বাতাসের ঝাপটা এসে পথচারীদের গায়ে লেগেছে। এমনটা যে হতে পারে, বুধবার রাতেও কিন্তু বোঝা যায়নি। এ দিন ভোরে আলিপুরের রেকর্ডে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা কিনা এ সময়ের স্বাভাবিক সর্বনিম্নের দু’ডিগ্রি বেশি। তবে আজ, শুক্রবার তা এক ধাক্কায় ১৪ ডিগ্রির কাছাকাছি নেমে আসতে পারে। আর এই প্রবণতা বজায় থাকলে চলতি সপ্তাহের শেষে কলকাতার রাতের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলতে পারে।

নতুন করে মুখ ফেরানো শীত স্থায়ী হবে ক’দিন? প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার কথা মাথায় রেখে আবহবিদেরা নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলতে চাইছেন না। তাঁদের একাংশের বক্তব্য: ফের কোনও বাধার সামনে না-পড়লে এ পর্যায়ের শীত ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত গড়াতে পারে। বাস্তবিকই পশ্চিমবঙ্গ থেকে শীতের বিদায়পর্ব একেবারে মিটে যায় না। দফায় দফায় সে হাজির হয়। ঠান্ডা-গরমের পালা চলে বেশ কিছু দিন, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শীত পুরোপুরি গায়েব হয়। সাধারণত ফেব্রুয়ারির গোড়ায় প্রক্রিয়াটি অন্তিম লগ্নে পৌঁছে যায়।

তাই এ দফার শীতই চলতি মরসুমের শেষ দফা, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন