কবিয়াল মেলায় চটুল নাচ, মাইক খোলাল প্রশাসন

রাজ্য কবিয়াল মেলার মঞ্চে চটুল নাচ-গানের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত সাগরদিঘির জিনদিঘিতে ওই অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক বাজে। এই গ্রামেই এবারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন ৪২ জন। বুধবারও একই ধরনের অনুষ্ঠান হবে বলে ঘোষণা হওয়ায় হওয়ায় রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৭
Share:

রাজ্য কবিয়াল মেলার মঞ্চে চটুল নাচ-গানের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত সাগরদিঘির জিনদিঘিতে ওই অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক বাজে। এই গ্রামেই এবারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন ৪২ জন। বুধবারও একই ধরনের অনুষ্ঠান হবে বলে ঘোষণা হওয়ায় হওয়ায় রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়েন পরীক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে সে অনুষ্ঠান বাতিল হয়। উদ্যোক্তাদের দিয়েই ভাঙানো হয় অনুষ্ঠানের মঞ্চ।

Advertisement

কবিয়াল গুমাণি দেওয়ানের জন্মভিটে জিনদিঘিতে ১৬ বছর ধরে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর এবং রাজ্য লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্র রাজ্য কবিয়াল মেলার আয়োজন করে আসছেন। গ্রামে গুমাণি দেওয়ানের স্মরণে চর্চা কেন্দ্র তৈরির কাজ না এগোলেও বছর অন্তে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকশিল্পীদের জমায়েত করে কিছু লোকসংস্কৃতি অনুষ্ঠানটা হয় কবিয়াল মেলায়।

চলতি বছর সেই মেলা শুরু হয় ৬ মার্চ থেকে। মেলার জন্য রাজ্য সরকার দিয়েছে ৮০ হাজার টাকা। বসেছে প্রায় ৪০টি দোকান। খাজনা বাবদ তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ১.৭৫ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আদায় হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। ঘোষিত অনুষ্ঠানসূচি মতো মঙ্গলবার বীরভূমের একটি নাচ গানের দল এসে রাত ৮ টা থেকে শুরু করে অশালীন নাচ। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কবিয়াল মঞ্চে চলে ওই অনুষ্ঠান। যা দেখে মর্মাহত কবিয়াল গুমাণি দেওয়ানের কন্যা লতা দেওয়ান বলেন, “১৬ বছর ধরে কবিয়াল মেলা হচ্ছে বাবার স্মৃতিতে। কবিগান, আলকাপ প্রভৃতি লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান হয়। এমনটা কখনও দেখিনি।”

Advertisement

জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সন্দীপ পাল অবশ্য বলেন, “এবারে ৫ দিনের জায়গায় রাজ্য কবিয়াল মেলা হয়েছে (৬ থেকে ৮ মার্চ) ৩ দিন। নির্বাচন ও পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত। তারপর সেখানে কোনও অনুষ্ঠানের সঙ্গে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের যোগ নেই। ৩ দিনের মেলায় ২২ জন কবিয়াল অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন। পরে কি হয়েছে জানি না।”

রাজ্য লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের সদস্য হিসেবে শক্তিনাথ ঝা ছিলেন এই কবিয়াল মেলার প্রধান উদ্যোক্তা। তিনি গুমাণি দেওয়ান চর্চা কেন্দ্রের প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতিও। তিনি বলেন, “কবিয়াল মেলা সরকারি ভাবে তিন দিন চললেও যেহেতু সেখানে বহু ব্যবসায়ী আসেন এবং প্রতিবার মেলা হয় ৫ দিনের, সেই কারণে ওই মঞ্চেই আলকাপ, বাউল ইত্যাদি অনুষ্ঠান আরও ক’দিন চালাবার আয়োজন করেছিলেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। তবে সরকারি সমস্ত ব্যানার অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আর কোনও অবস্থাতেই অশালীন নাচ-গান হওয়ার কথা নয়। এটা হয়ে থাকলে অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।” সাগরদিঘি-র বিডিও দেবব্রত সরকার বলেন, “ওই গ্রামে বহু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আছে। অনুষ্ঠানস্থল থেকে ৫০ মিটার দূরে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। অভিযোগ পেয়েই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয় বুধবার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন