কমিশন কুণালকে না-ডাকায় প্রশ্ন

সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে গত সাত মাসে অন্তত তিরিশ দিন শ্যামল সেন কমিশনে হাজির করা হয়েছে। তাঁর একদা ‘ছায়াসঙ্গিনী’ দেবযানী মুখোপাধ্যায়ও বার কয়েক এসেছেন। অথচ সারদা-কাণ্ডে আর এক অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষকে একটি বারের জন্যও ডেকে পাঠায়নি কমিশন। প্রায় সাত মাস ধরে জেলবন্দি কুণাল কমিশনকে লিখিত জানিয়েছেন, সারদা-কাণ্ড সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে চান। কিন্তু তাঁর আবেদনে এখনও সাড়া না-মেলায় প্রশ্ন দানা বেঁধেছে কমিশনের অন্দরেই।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে গত সাত মাসে অন্তত তিরিশ দিন শ্যামল সেন কমিশনে হাজির করা হয়েছে। তাঁর একদা ‘ছায়াসঙ্গিনী’ দেবযানী মুখোপাধ্যায়ও বার কয়েক এসেছেন। অথচ সারদা-কাণ্ডে আর এক অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষকে একটি বারের জন্যও ডেকে পাঠায়নি কমিশন। প্রায় সাত মাস ধরে জেলবন্দি কুণাল কমিশনকে লিখিত জানিয়েছেন, সারদা-কাণ্ড সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে চান। কিন্তু তাঁর আবেদনে এখনও সাড়া না-মেলায় প্রশ্ন দানা বেঁধেছে কমিশনের অন্দরেই।

Advertisement

সারদা-কাণ্ড নিয়ে ইডি সাম্প্রতিক তৎপরতার প্রেক্ষিতে বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়ে গিয়েছে। কমিশনের এক পদস্থ অফিসারের বক্তব্য: কমিশনে হাজির হয়ে সুদীপ্ত বার বার দাবি করেছেন, সংবাদ মাধ্যমের ব্যবসায় নামার পরেই তাঁর ভরাডুবির শুরু। এমতাবস্থায় সারদা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন সংবাদ মাধ্যমের গুরুদায়িত্ব ছিল যাঁর হাতে, সেই কুণালকে এখনও তলব না-করায় বিস্ময় প্রকাশ করে অফিসারটির মন্তব্য, “শুধু তো সারদায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কমিশন তৈরি হয়নি! এত বড় একটা আর্থিক কেলেঙ্কারি কী ভাবে হল, নেপথ্যে কারা এ সব খুঁজে বার করাও কমিশনের অন্যতম দায়িত্ব।”

কুণাল ঘোষকে বক্তব্য পেশের সুযোগ না-দিলে সে দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করা হবে না বলে মনে করছেন কমিশনের একাংশ। সূত্রের খবর: মাসখানেক আগে কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেনকে চিঠি পাঠান কুণাল। হাতে লেখা এক পাতার ওই চিঠিতে তিনি জানান, কমিশনে হাজির হয়ে তিনি কিছু বলতে ইচ্ছুক।

Advertisement

শ্যামলবাবুর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “ডাকা হয়নি মানে যে ডাকা হবে না, এমন তো নয়!” মঙ্গলবার তিনি ইঙ্গিত দেন, খুব শিগগিরই কুণালকে কমিশনে ডেকে বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা হবে। কমিশনের সদস্য অম্লান বসু বলেন, “সারদার টাকা যাঁরা নিয়েছেন বলে অভিযোগ, তাঁদেরই প্রথমে তলব করছি। পরে কুণালকেও ডাকা হবে।”

ইডি’র তৎপরতা দেখে সারদা-তদন্তে পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে কোনও কোনও মহলে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শ্যামল সেন কমিশনও পিয়ালি-শুভজিৎ বা প্রিয়াঙ্কাকে ডেকে না-পাঠানোয় প্রশ্ন উঠছে। কমিশনের এক অফিসারের কথায়, “দেবযানী কমিশনের জেরার মুখে জানান, সুদীপ্তের নির্দেশে পিয়ালিকে নানা সময়ে কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে। কমিশনের এজলাসে সুদীপ্তর সামনেই দেবযানী এ দাবি করেছেন।”

কমিশন-সূত্রের খবর, সুদীপ্ত বা দেবযানীর দেওয়া বয়ানে উঠে আসা অনেককে কমিশনে তলব করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ব্যতিক্রম পিয়ালি সেন। এবং অবশ্যই কুণাল ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন