নীলরতন সরকার (এনআরএস) মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের কয়েক জন হবু চিকিৎসকের মোবাইল থেকে ১৫ নভেম্বর রাতভর অস্বাভাবিক হারে ফোন করা হয়েছিল বলে দাবি করল কলকাতা পুলিশ। ১৫ নভেম্বর রাতে ওই হস্টেলে গণপিটুনিতে কোরপান (কুরবান) শাহ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। ১৬ নভেম্বর ভোরে বিষয়টি জানাজানি হয় এবং চার তলার একটি ঘর থেকে কোরপানের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
কোরপানের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে, বাঁশ জাতীয় কিছু দিয়ে তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ ওই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের অভিযোগ, এনআরএস কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতায় এত দিন হস্টেলের আবাসিকদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য পায়নি তারা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর নির্দোষ ছাত্রদের যাতে হেনস্থা না-করা হয়, সেই দাবি জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দিয়ে রেখেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ওই চিঠি পাওয়ার পরেই স্বাস্থ্য ভবন তদন্তের রাশ টেনে ধরে। তবে মঙ্গলবার হস্টেলের আবাসিকদের ফোন নম্বর পাওয়ায় পুলিশ কিছুটা আশার আলো দেখছে।
এক তদন্তকারী অফিসার বুধবার বলেন, “হস্টেলের আবাসিকদের মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়ার পরে তদন্তে যে নতুন দিশা মিলবে, তা আমরা ধরেই নিয়েছিলাম। মোবাইলগুলির কল লিস্ট পরীক্ষা করে আমরা দেখেছি, কয়েক জনের ফোন থেকে ১৫ তারিখ গভীর রাত থেকে ১৬ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত অস্বাভাবিক সংখ্যক ফোন কল করা হয়েছে। ওই সব হবু চিকিৎসকদের আমরা চিহ্নিত করেছি।”
তবে ১৬ নভেম্বর ভোরের ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানাচ্ছে, ওই প্রত্যক্ষদর্শীর নাম রবিউল। তিনি হস্টেলের নির্মাণ কাজে নিযুক্ত এক জন শ্রমিক। পুলিশের দাবি, ঘটনার পর তদন্তকারীদের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন রবিউল। তাঁকে দিয়ে সম্ভাব্য অভিযুক্তদের ছবি আঁকানোর পরিকল্পনাও ছিল তদন্তকারীদের। কিন্তু তদন্তের টালবাহানার সুযোগে ওই ব্যক্তি এনআরএস-এ আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ঠিকাদারের থেকে নাম ঠিকানা নিয়ে মঙ্গলবার রবিউলের খোঁজে সুন্দরবন এলাকায় গিয়েছে পুলিশের একটি দল। তদন্তকারীদের বক্তব্য, রবিউল ঘটনার অন্যতম সাক্ষী। তাই তাঁকে পেলে তদন্তে সুবিধে হবে। রবিউলের মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে গায়েব করা হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।