কলকাতার গঙ্গাতীরেই ঠিক হল ‘আই’-এর ঠিকানা

গঙ্গাতীরে ‘লন্ডন আই’-এর ধাঁচে ‘কলকাতা আই’ গড়ে তোলার কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার। বুধবার নবান্নে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পিপিপি মডেলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি ব্রিটিশ সংস্থা এই প্রকল্প গড়ে তুলবে। গঙ্গাতীরে মিলেনিয়াম পার্কে এই প্রকল্প তৈরি হবে কলকাতা বন্দরের জমিতে। ইতিমধ্যেই কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:৫৫
Share:

টেমস নদীর ধারে ‘লন্ডন আই’।

গঙ্গাতীরে ‘লন্ডন আই’-এর ধাঁচে ‘কলকাতা আই’ গড়ে তোলার কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার। বুধবার নবান্নে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পিপিপি মডেলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি ব্রিটিশ সংস্থা এই প্রকল্প গড়ে তুলবে। গঙ্গাতীরে মিলেনিয়াম পার্কে এই প্রকল্প তৈরি হবে কলকাতা বন্দরের জমিতে। ইতিমধ্যেই কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

Advertisement

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যেই লন্ডনের আদলে গঙ্গাকে কেন্দ্র করে কলকাতাকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নেয় বর্তমান রাজ্য সরকার। তার অন্যতম অংশই হল ‘লন্ডন আই’-এর ধাঁচে ‘কলকাতা আই’ গড়ে তোলা। নগরোন্নয়ন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই ‘কলকাতা আই’ আসলে নাগরদোলায় চেপে তিনশতাব্দী প্রাচীন মহানগরীকে দেখা।

‘লন্ডন আই’ তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তার উচ্চতা ১৩৫ মিটার। নাগরদোলায় রয়েছে ৩২টি কেবিন বা ক্যাপসুল। এক বার চক্কর দিতে সময় নেয় আধ ঘণ্টা। একসঙ্গে ৮০০ লোক চড়তে পারে লন্ডন আইয়ে।

Advertisement

একই ভাবে ঠিক হয়েছে, ‘কলকাতা আই’-এর উচ্চতা হবে ১০০ মিটার। তবে কতগুলি কেবিন হবে এবং ওই চত্বরে কী কী থাকবে, তা বিস্তারিত ভাবে ঠিক হবে প্রকল্প রিপোর্টেই। প্রকল্পের পেশাদার পরামর্শদাতা ‘আইএলএফএস ইনফ্রাস্ট্রাকচার’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিলেনিয়াম পার্কের জমির মালিক কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে ওই জমিতে ‘কলকাতা আই’ গড়ে তোলার সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। ফিরহাদ হাকিম এ দিন বলেন, “১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ করা হবে। পুরো প্রকল্প তৈরিতে খরচ হবে ৩৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা দেবে ব্রিটিশ সংস্থাটি এবং বাকি ৮১ কোটি টাকা দেবে রাজ্য সরকার। তবে প্রকল্পের খরচ বাড়লে, তা বহন করবে ব্রিটিশ সংস্থাটি।”

তবে কলকাতা আই কোথায় তৈরি হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে টালবাহানা চলেছে প্রায় দেড় বছর ধরে। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, হাওড়ার দিকে গঙ্গাতীরেই তৈরি হবে ‘কলকাতা আই’। সেইমতো সেখানে তিন একর এবং সাড়ে তিন একরের দু’টি জমি দেখা হয়েছিল। কিন্তু সমীক্ষা করে দেখা যায়, হাওড়ার দিকে ‘কলকাতা আই’ তৈরি হলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করতে উত্‌সাহ দেখাবে না। এর পরেই মিলেনিয়াম পার্কে ‘কলকাতা আই’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। আগামী বছরই কলকাতা পুরসভার ভোট। তার পরের বছরেই সারা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ‘কলকাতা আই’ তৈরির সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাত্‌পর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

নবান্ন সূত্রের খবর, ‘কলকাতা আই’ তৈরির জন্য মোট তিনটি সংস্থা আবেদন করেছিল। তার মধ্যে থেকে ব্রিটিশ সংস্থাটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংস্থাটি খুব শীঘ্রই বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র কাছে। ওই দুই সংস্থা থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরে ‘কলকাতা আই’ তৈরির কাজ শুরু করবে ব্রিটিশ সংস্থাটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন