মাখড়া-কাণ্ড

চার্জশিটে আমরা-ওরা, অভিযোগ বিজেপির

পাড়ুইয়ের তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত বা ধড়পাকড় করার ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ নতুন নয়। বিজেপির দাবি ছিল শাসকদলকে তুষ্ট রাখেতেই বেশি সচেষ্ট পুলিশ। দিনকয়েক আগে মাখড়া-কাণ্ডে নিহত তৃণমূলকর্মী শেখ মোজাম্মেল খুনে চার্জশিট জমা পরার পর পুলিশের বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগে সরব এ বার বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

পাড়ুইয়ের তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত বা ধড়পাকড় করার ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ নতুন নয়। বিজেপির দাবি ছিল শাসকদলকে তুষ্ট রাখেতেই বেশি সচেষ্ট পুলিশ। দিনকয়েক আগে মাখড়া-কাণ্ডে নিহত তৃণমূলকর্মী শেখ মোজাম্মেল খুনে চার্জশিট জমা পরার পর পুলিশের বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগে সরব এ বার বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি দুধ কুমার মণ্ডলের অভিযোগ, “একই দিনে নিহত বিজেপি কর্মী শেখ তৌসিফ আলি খুনের তদন্ত শেষ হল না। অভিযুক্তদের অনেকই অধরা, অথচ শাসকদলের ওই কর্মী খুনে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দিয়ে পুলিশ এটা নিশ্চিত করেছে যাতে আমাদের দলের লোকেরা জামিন না পায়। শাসকদলের প্রতি পুলিশের আনুগত্য ছাড়া একে কী ভাবে ব্যাখ্যা করব!”

Advertisement

যে চার্জশিট সম্পর্কে বিজেপির এই মন্তব্য, মোজাম্মেল খুনের ৩২ পাতার সেই চার্জশিট জমা পড়েছে গত ২৬ জানুয়ারি। নাম রয়েছে ২৭ জনের। সদাই শেখ-সহ চার্জশিটে নাম থাকা সকলেই বিজেপি নেতা-কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। প্রসঙ্গত বিজেপি নেতা সদাই শেখ বর্তমানে জেলেই রয়েছেন। চার্জশিট জামা পড়ায় তাঁর জামিন পাওয়ার সম্ভবানা কমে গেল।

ঘটনা হল, গত বছর ২৭ অক্টোবর পাড়ুইয়ের মাখড়ায় এক বিজেপি ও দুই তৃণমূল কর্মী-সহ মোট তিন জন রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি হন। অহত হন আরও দুই তৃণমূল কর্মী। তিন জনের মধ্যে বিজেপি কর্মী শেখ তৌসিফ আলি ও শেখ মোজাম্মেল মাখড়া গ্রামের বাসিন্দা। শেখ সোলেমান নামে অপর এক তৃণমূলকর্মীর বাড়ি দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রামে। বিজেপির অভিযোগ ছিল, গ্রাম পূর্ণদখল করতে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল শাসকদল। পরে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন গ্রামবাসী। তিনটি খুনের ঘটনায় পৃথক তিনটি অভিযোগ জমা পড়ে পাড়ুই থানায়।

Advertisement

ঘটনার পর তৌসিফের বাবা শওকত আলি ২০ জন তৃণমূল নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে, মোজাম্মেলের দিদি নুরেলা বিবি ২৩ জন ও সোলেমানের স্ত্রী আমপাড়া বিবি ১১ জন বিজেপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাড়ুই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা রুজু করে। এরপর দু’পক্ষের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই বিজেপির অভিযোগ ছিল তাঁদের দলের নেতা শেখ সদাই, শেখ সামাদ, শেখ শাহজাহানের মতো নেতা গ্রেফতার হলেও শাসকদলের অভিযুক্তদের ধরার ক্ষেত্রে তেমন তত্‌পরতা দেখায়নি পুলিশ। চার্জশিট জমা পড়ায় আবার সেটা প্রমানিত হল। যদিও তৃণমূল সেটা মানতে নারাজ।

জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “মোটেই শাসকদলের অভিযুক্তদের ছেড়ে দিয়ে শুধু বিজেপির লোকজনকে ধরেছে এমন নয়। আর তাই যদি হবে যেখানে নুরেলা বিবি ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল, সেখানে পুলিশ ২৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল কী ভাবে? আবার অভিযোগে নাম থাকা অনেককে তো বাদও দিয়েছে পুলিশ।” তাঁর দাবি, “এখনও শেখ হাবল-সহ বেশ কয়েকজন কর্মী জামিন পাননি। সে নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলিনি।”

পুলিশ অবশ্য এর মধ্যে পক্ষপাতিত্বের কিছু খুঁজে পাচ্ছে না। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, এই নিয়ে হৈ চৈ করার কিছু নেই তদন্ত শেষে হয়েছে চার্জশিট জমা পড়েছে। সদ্য প্রাক্তন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছিলেন, একটি খুনের ঘটনায় চার্জশিট জমা পড়েছে। বাকি গুলিরও পড়বে। এটা তদন্ত শেষ হওয়া অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার উপর নির্ভর করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement