ছদ্মবেশ ছেড়ে স্বমূর্তিতে হাজির শীত

নভেম্বরের গোড়াতেই হিমেল হাওয়ায় তার হাতছানি দেখে বেশ অবাক আর খুব খানিকটা আশ্বস্ত হয়েছিলেন নগরবাসী। কিন্তু ইঙ্গিত দিয়েও আসতে ক্রমাগত দেরি করায় ‘সে কি এল, সে কি এল না’ বলে সংশয়ও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। হাওয়া অফিস বলছিল, ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব মানেই কিন্তু শীত নয়। ওটা ছদ্ম-শীত। অবশেষে ছলনার পর্দা সরিয়ে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রকৃত শীত এল কলকাতায়। এবং একই সঙ্গে এল গোটা দক্ষিণবঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৩
Share:

নভেম্বরের গোড়াতেই হিমেল হাওয়ায় তার হাতছানি দেখে বেশ অবাক আর খুব খানিকটা আশ্বস্ত হয়েছিলেন নগরবাসী। কিন্তু ইঙ্গিত দিয়েও আসতে ক্রমাগত দেরি করায় ‘সে কি এল, সে কি এল না’ বলে সংশয়ও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। হাওয়া অফিস বলছিল, ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব মানেই কিন্তু শীত নয়। ওটা ছদ্ম-শীত। অবশেষে ছলনার পর্দা সরিয়ে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রকৃত শীত এল কলকাতায়। এবং একই সঙ্গে এল গোটা দক্ষিণবঙ্গে।

Advertisement

উত্তর ভারতের শীতল হাওয়া মঙ্গলবারেই বিহার ও ঝাড়খণ্ড হয়ে ঢুকে পড়েছিল কলকাতায়। শেষ রাতে তার ঝোড়ো আবির্ভাব টের পাওয়া গিয়েছে। বুধবার প্রাতর্ভ্রমণকারীরা তার পদচিহ্ন দেখেছেন রাস্তা প্রায় ঢেকে ফেলা শুকনো পাতায়। এ দিন তীব্রতা বেড়েছে হিম-হাওয়ার। রাতের তাপমাত্রা মঙ্গলবার থেকেই নামতে শুরু করেছিল। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আজ, বৃহস্পতিবার উত্তুরে হাওয়ার দাপট বাড়বে। আরও নামবে রাতের তাপমাত্রা।

প্রথমে মধ্য ভারতের ঘূর্ণাবর্ত এবং পরে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য দক্ষিণবঙ্গের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। তার ফলে দিনের তাপমাত্রা কমলেও রাতের তাপমাত্রা বাড়ছিল। দিনের বেলা শীত অনুভূত হলেও অস্বস্তি হচ্ছিল রাতে। হাওয়া অফিস আশ্বাস দিয়েছিল, মেঘ কেটে রোদ উঠলেই আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটবে। মঙ্গলবার রোদের দেখা মিলেছিল। আর তার পরেই বাংলার পরিমণ্ডলে ঢুকতে শুরু করে দেয় উত্তুরে হাওয়া। বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার তা ১৪ ডিগ্রিতে নেমে আসতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা। তাঁদের ধারণা, চলতি সপ্তাহের শেষে তা ১৩ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে।

Advertisement

বীরভূম ও বর্ধমানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অবশ্য বুধবারেই ১৩ ডিগ্রির নীচে নেমে গিয়েছে। বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ আর নদিয়ার তা নেমে এসেছে ১৩ ডিগ্রির কাছাকাছি। চলতি সপ্তাহের শেষে ওই সব জেলায় তাপমাত্রা নামতে নামতে ১০ ডিগ্রিতে চলে আসতে পারে বলে মনে করছে হাওয়া অফিস। তারা জানিয়েছে, এর মধ্যে কোনও ঘূর্ণাবর্ত নতুন করে বাধা সৃষ্টি না-করলে বড়দিনের সঙ্গী হিসেবে কড়া শীত পেতে পারেন বঙ্গবাসী।

বাংলায় শীত সবে হাজির হলেও রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে গিয়েছে। দিল্লির মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ওই সব অঞ্চলে এই পরিস্থিতির মূলে আছে আফগানিস্তান-পাকিস্তান হয়ে আসা পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দাপট। তারই প্রভাবে তুষারপাত চলছে হিমাচলের পাহাড়ে। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় জীবনযাত্রা ব্যাহত। ওই সব অঞ্চলে এই পরিস্থিতি যত দিন থাকবে, তত দিন এ রাজ্যেও শীত থাকবে বহাল তবিয়তে। মৌসম ভবনের এক আবহবিদ জানাচ্ছেন, আপাতত উত্তর ভারত থেকে পূর্ব ভারতে উত্তুরে হাওয়া যাওয়ার পথ পুরোপুরিই পরিষ্কার। তাই উত্তর ভারতে যত দিন ঠান্ডা থাকবে, তার প্রভাব থাকবে পশ্চিমবঙ্গেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন