টয় ট্রেন বাহনে সান্তা এ বার দার্জিলিঙে

এ যাত্রায় বেঁচে গেল ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ খেতাব। বরং, বড়দিনের মুখে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য সুখবর, ফের চেনা ছন্দে ফিরতে চলছে ইউনেস্কো-র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে চিহ্নিত দার্জিলিঙের টয় ট্রেন। ধস, ভূমিকম্পের জন্য টানা চার বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫
Share:

পরীক্ষামূলকভাবে টয় ট্রেন চালানো হল শুক্রবারও। ছবি: রবিন রাই।

এ যাত্রায় বেঁচে গেল ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ খেতাব। বরং, বড়দিনের মুখে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য সুখবর, ফের চেনা ছন্দে ফিরতে চলছে ইউনেস্কো-র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে চিহ্নিত দার্জিলিঙের টয় ট্রেন। ধস, ভূমিকম্পের জন্য টানা চার বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চলবে। তাই সান্তা যেন বড়দিনের উপহার নিয়ে টয় ট্রেনেই পৌঁছবেন পাহাড়ে।

Advertisement

প্রথম দিন শিলিগুড়িতে ছোট্ট অনুষ্ঠানের পর পাহাড়ি পথ বেয়ে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে টয় ট্রেন পৌঁছবে শৈলশহরে। পরদিন থেকে দু’টি ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিদিন সকালে একটি আসবে দার্জিলিং থেকে, অন্যটি যাবে শিলিগুড়ি জংশন থেকে। শুক্রবার এনজেপি স্টেশনের একটি অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়ে দেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণকুমার শর্মা।

ডিআরএম বলেন, “লাইনটি সংস্কারের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ করেছে রেল।” উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুগত লাহিড়ির কথায়, ট্রেনের দৈনন্দিন সময়সূচি খুব শীঘ্রই জানানো হবে।

Advertisement

২০১০ সালের জুনে পাগলাঝোরায় ধসে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের ৫৫০ মিটার এলাকা। ধসের কবলে পড়ে টয় ট্রেনের ন্যারো গেজ লাইনও। পরের বছর সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পে আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় রেললাইন। তিনধারিয়া এবং পাগলাঝোরা এলাকায় লাইন উড়ে যায়। মেরামতি শুরু হয়। তবে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ি পথে ভঙ্গুর পাথর ও মাটি ধসে পড়ায় কাজ এগোচ্ছিল না । ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলিতে বাঁক থাকায় তা টিকিয়ে রাখা রীতিমতো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর জাপান-সহ বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তিগত সাহায্য নিয়ে রাস্তার কাজ শুরু হয়। রাজ্য ও পাহাড়ের জিটিএ কর্তৃপক্ষের তরফে একাধিক বার কেন্দ্রের কাছে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানানো হয়। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতের জন্য ১৭০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়।

এরই মধ্যে টয় ট্রেন বা দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা প্রায় মুছতে বসে। ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ওই তকমা পেয়েছিল টয় ট্রেন। বিভিন্ন মহলে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই রেলের তরফে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করে, জাতীয় সড়কটির এক পাশ দিয়ে দ্রুত নতুন করে রেল লাইন বসানো হয়। ৯ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন চালানো শুরু হয়েছে। বড়দিনের দিনই নতুন করে ৮৭ কিলোমিটার পুরনো রুটে চলবে টয় ট্রেন। ২০১৩-এ পাগলাঝোরার বিধ্বস্ত এলাকা ঠিক হওয়ায় দার্জিলিং থেকে গয়াবাড়ি রুটে জয়রাইড শুরু হয়েছিল। একই ভাবে শিলিগুড়ি থেকে রংটং অবধিও চালানো হয়। তবে চা বাগান, জঙ্গল, পাহাড়ের পাকদণ্ডি ঘুরে ঘুম-সোনাদা পেরিয়ে পাহাড় না ছোঁয়া পর্যন্ত অস্বস্তিটা থেকে গিয়েছিল। রাজ্যের পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের দাবি “টয় ট্রেন নতুন করে চালু হওয়ায় উত্তরবঙ্গের পর্যটনে জোয়ার আসবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন