দেহাবশেষ শনাক্ত করার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় আড়াই বছর। কিন্তু এখনও ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট না-মেলায় ঝাড়গ্রামের এক স্কুলশিক্ষকের পরিবার জানতে পারছে না, দেহটি ওই শিক্ষকেরই কি না। সেটা জানতে না-পারায় ডেথ সার্টিফিকেট মিলছে না। ফলে পরিবারটি প্রাপ্য পাচ্ছে না। ওই শিক্ষকের ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির ডিরেক্টরকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
পুলিশ জানায়, ঝাড়গ্রামের বিড়ানডিহির বাসিন্দা দেবেন্দ্রনাথ সিংহ কাজলা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ২০১০ সালের ১৯ নভেম্বর এক দল যুবক তাঁকে স্কুল থেকে অপহরণ করে। প্রায় তিন বছর পরে, ২০১৩ সালের ৪ অগস্ট স্থানীয় গামারিয়া-মাসানডিহির জঙ্গলে কিছু হাড়গোড় ও মলিন জামাকাপড় মেলে। দেবেন্দ্রবাবুর ছেলে হিমাংশু পুলিশকে জানান, ওগুলো তাঁর বাবারই। কিছু দিন পরে শিক্ষকের পরিবার ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসককে অনুরোধ জানায়, ওই হাড়গোড় দেবেন্দ্রনাথের কি না, তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হোক।
শিক্ষকের পরিবারের অভিযোগ, ওই হাড়গোড়ের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে রিপোর্ট মিলেছে কি না— কিছুই তাদের জানানো হয়নি। তাই হাইকোর্টে যান শিক্ষকের ছেলে। তাঁর আইনজীবী সুজয় ভুঁইয়া জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়, দেবেন্দ্রবাবুর পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি কম। ডিএনএ পরীক্ষা না-হওয়ায় মিলছে না ডেথ সার্টিফিকেট। পেনশনও পাচ্ছেন না দেবেন্দ্রবাবুর স্ত্রী পারুলদেবী। ক্ষতিপূরণ হিসেবে শিক্ষকের তিন ছেলের এক জনের চাকরি পাওয়ার কথা। কিন্তু তা-ও পাচ্ছেন না।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এ দিন সরকারি কৌঁসুলি অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে কি?
সরকারি কৌঁসুলি জানান, গত বছরের জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে ওই হাড়গোড় এবং জামাকাপড় পাঠানো হয়। ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য তাগাদাও দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি দ্রুত ডিএনএ রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তী শুনানি আগামী ৪ মার্চ।