প্রথম দুই রাউন্ডের ফলাফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এ বার ডার্বির তৃতীয় রাউন্ডের প্রস্তুতি যেন শারদ উৎসবের প্রাক্কালেই শুরু হয়ে গেল। পুজোর দিনগুলিতে নাগরিক পরিষেবা নিয়ে মন্ত্রী, মেয়রের তরজায় সরগরম শিলিগুড়ি। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব যেমন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে উদ্ধত আচরণের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। তেমনই, মন্ত্রীকেও সমান্তরাল প্রশাসন না চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে আপাতত বিশ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মেয়র।
আপাতত, দুই-এর ‘লড়াই’ শুরু হয়ে গিয়েছে, পুজো, মহরমের দিনগুলিতে শহরের নাগরিক পরিষেবা নিয়েই। আর তাতেই আরেক দফায় যোগ হয়েছে, এসজেডিএ-র দুর্নীতি থেকে শুরু করে বাম জমানার নানা খামতিও। আবার তাতে নাম জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ অফিসারদেরও। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। তবে পুরসভার পর পঞ্চায়েত নিবার্চনে হেরে গৌতমবাবু অবশ্য কিছু ব্যাকফুটেই আছেন।
তাই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলার সঙ্গে সঙ্গে অশোকবাবু বলেছেন, ‘‘শহরের পুলিশ-প্রশাসন তো ওঁর কথায় চলছে। আমাদের সঙ্গে দেখা করা, চিঠি দেওয়ার মধ্যে সৌজন্যবোধও দেখাচ্ছেন না অফিসারেরা।’’ পাল্টা সরব মন্ত্রীও। মেয়রের কথা প্রসঙ্গে উনি বলেছেন, ‘‘শিলিগুড়িতে জিতে ওঁর দম্ভে তো আর থাকা যাচ্ছে না। ক্ষমতা পেলেই তো দেখছি, দাঁত নখ বার হয়ে আসছে। গোটা রাজ্যে তো ওঁরা হেরেছেন। তার পরেও আমাকে এ সব বলছেন!’’
আগামী সপ্তাহে পুজো শুরু। শহরের আইন শৃঙ্খলা যেমন পুলিশ-প্রশাসন, মন্ত্রী আমালদের দেখার কথা তেমনিই পুর পরিষেবা দেখার কথা পুরসভার। অশোকবাবুদের অভিযোগ, মন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ-প্রশাসন পুরসভা এড়িয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। সঠিক সময়ে কোনও কিছু জানানো হচ্ছে না। পুলিশ কমিশনার চিঠি দিয়েছে, কী কী বিসর্জন ঘাটে করতে হবে তা যেভাবে লিখছেন, তা যেন অনেকটা নির্দেশের সামিল। আমরা আমাদের মত প্রস্তুতি রাখছি, রাস্তা সারাই, বিসর্জন ঘাট তৈরি, কন্ট্রোল রুম, হেলখ ক্যাম্প, আলো, রাস্তা ধোঁয়া, জঞ্জাল অপসারণ সব করা হচ্ছে।
যদিও পুরসভা সঠিকভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন না বলে এদিনও অভিযোগ করেছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেছেন, ‘‘শহর জঞ্জালে ছেয়েছে। আমাদের দেওয়ার যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। ম্যাসটিক রাস্তাগুলির ক্ষতি করা হচ্ছে। ওঁরা না পারলে বলুন আমরাই সব করে দেব। গত কয়েক মাসে আমরা শহরের জন্য ২০০ কোটি টাকা খরচও করেছি। ওঁদের মত পুরসভার পাওনা রেখে যাইনি।’’
২০০ কোটি টাকাকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মন্ত্রী অশোকবাবু। তিনি জানান, ২০০ কোটি তো এসজেডিএতে লুঠ হয়েছে। আর যে ২০০ কোটির কথা মন্ত্রী বলছেন, তাতে নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য কতটা বেড়েছে তা মানুষ জানেন।
মন্ত্রীর অবশ্য এক্ষেত্রে জবাব, ‘‘মানুষ এসব কথাবার্তার জবাব দেবে। আসলে উনি কাজের থেকে রাজনীতি করাটা বেশি পছন্দ করেন। মেয়রের চেয়ারে বসে তাই করে যাচ্ছেন। ওঁর লজ্জা হওয়া উচিত।’’