১৮ নম্বর লালবাজার স্ট্রিট থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার ১ নম্বর হ্যাকার ওয়ে।
যাদবপুরের ছাত্রী ত্রিপর্ণা দে সরকারকে ফেসবুকে খুন ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাড়ি দিল ১৩০২৭ কিলোমিটার! গত বৃহস্পতিবার যাদবপুর থানায় এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ত্রিপর্ণা। সেই অভিযোগ এবং ওই ছাত্রীকে লালবাজারের সাইবার থানায় পাঠান যাদবপুরের অফিসারেরা। লালবাজার সূত্রের খবর, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে মামলা রুজু করেছেন গোয়েন্দারা। যে সব অ্যাকাউন্ট থেকে ত্রিপর্ণাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে তথ্য চেয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুকের সদর দফতরেও যোগাযোগ করেছেন তদন্তকারীরা।
জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক কানহাইয়া কুমারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে মিছিল করেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। সেই মিছিলের অন্যতম মুখ ছিলেন ত্রিপর্ণা। ওই মিছিল থেকেই দেশবিরোধী কিছু স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যার জেরেই ফেসবুকে তাঁর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য, খুন এবং ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ত্রিপর্ণা। পুলিশ মামলা রুজু করলেও ফেসবুকে এই তরুণীর উদ্দেশে কটূক্তি, হুমকি কমেনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের এই ছাত্রী শনিবার বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ করার পর থেকেই হুমকির পরিমাণ বেড়েছে। তাই পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে কতটা সক্ষম, প্রশ্ন উঠছে।’’
পুলিশের অবশ্য দাবি, তদন্ত চলছে জোর কদমেই। আবার পুলিশ সূত্রেরই খবর, কোনও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, এমন বিষয় ছাড়া ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য গোয়েন্দাদের দেওয়া ফেসবুকের নিজস্ব বিবেচনার বিষয়। প্রসঙ্গত, ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটূক্তি করায় ২০১২ সালে সিআইডি মামলা রুজু করে ফেসবুকের কাছে ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়েছিল। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত মেলেনি। তা হলে
এ ক্ষেত্রে কী হবে?
পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিপর্ণার দায়ের করা অভিযোগে, দু’টি সংগঠনের পাশাপাশি এক যুবকের নামও রয়েছে। ওই দু’টি সংগঠনের ফেসবুক ‘পেজ’ কারা নিয়ন্ত্রণ করেন (অ্যাডমিনিস্ট্রেটর) এবং কোন কম্পিউটার থেকে তা ব্যবহার করা হয়েছে (ইন্টারনেট প্রোটোকল বা আইপি অ্যাড্রেস), তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সাইবার ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ফেসবুক আইপি অ্যাড্রেস জানিয়ে দেয়। তা খতিয়ে দেখে কোন পরিষেবা সংস্থার ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়েছে, তা জানা সম্ভব। এ বার সেই সংস্থার কাছ থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্য মিলতে পারে। ফোন থেকে ফেসবুক করলেও, সেই তথ্য পাওয়া সম্ভব।