সাংবাদিক সম্মেলনে গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
এসজেডিএ-এর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের সব কটি মামলার চার্জশিট এখনও জমা পড়েনি। তাই কাউকে আড়াল করার অভিযোগ তোলা ঠিক নয় বলে দাবি করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গৌতমবাবুই বর্তমানে এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান। আলিপুরদুয়ারের নিখোঁজ সাংবাদিককে উদ্ধার করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এবং পদক্ষেপ সম্পর্কে জানাতে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন গৌতমবাবু। শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের পার্টি অফিসে সেই সাংবাদিক বৈঠকেই এসজেডিএ-এর আর্থিক দুর্নীতি প্রসঙ্গ ওঠে।
সম্প্রতি ময়নাগুড়িতে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ মামলায় সিআইডি চার্জশিট পেশ করেছে। শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা সেই চার্জশিটে গোদালা কিরণ কুমার, সংস্থার বাস্তুকার সহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এসজেডিএ-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান-সহ বোর্ড সদস্যদের কয়েকজনকে সাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়। এই ঘটনাতেই কংগ্রেস এবং বামেরা অভিযুক্তদের একাংশকে আড়াল করার অভিযোগ তোলে।
সে অভিযোগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই এ দিন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘বিচারাধীন এবং যে ঘটনার তদন্ত চলছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে অভিযোগ তুললেই হল না। রাজ্য সরকার অভিযুক্তদের কাউকেই আড়াল করবে না। এখনও সব মামলার চার্জশিট জমা পড়েনি। চার্জশিট জমা পড়ার পরেও ‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট’ জমা পড়ার সুযোগ থাকে। আগে সে সব পর্ব মিটুক, তারপরে না হয় বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে উত্তর দেব।’’
তৃণমূলের অন্দরের একাংশ নেতাদের দাবি, পুরবোর্ড হাতছাড়া হওয়ার পেছনে এসজেডিএ কাণ্ডও অন্যতম প্রভাব ফেলেছিল। গত মাসেই শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য কলকাতায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠক করে এসজেডিএ কাণ্ড নিয়ে সিআইডির তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দাবি করেছিলেন সিবিআই তদন্তের।
তারপরেই সিআইডির চার্জশিটে বোর্ড সদস্যদের কয়েকজনকে সাক্ষী করার ঘটনা নিয়ে শিলিগুড়িতে এসে প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। গত সোমবার সূর্যকান্তবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের অনেককেই সাক্ষী করা হচ্ছে। কিছু লোককে আড়াল করতেই সিআইডি তদন্ত হচ্ছে।’’
তৃণমূলের জেলা নেতাদের অনেকেরই দাবি, তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন ওঠায় এসজেডিএ অস্বস্তি কিছুতেই কাটছে না। সে কারণেই এ দিন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতমবাবু বাকি মামলার চার্জশিট এবং সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়া বাকি রয়েছে বলে অস্বস্তি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
অন্যদিকে, এ দিন-ই দার্জিলিং জেলা আদালতে এসজেডিএ-এর প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমারের জামিনের আবেদন করা হয়েছে। সিআইডি চার্জশিটে নাম থাকা গোদালার দুই আত্মীয়ের হয়েও এ দিন আগাম জামিনের আবেদন করেছেন আইনজীবী অভ্রজ্যোতি দাস। গোদালার শ্বশুর এবং শ্যালককে সিআইডি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত করেছে। চার্জশিটে দু’জনকেই ফেরার দেখানো হয়েছে। আইনজীবী অভ্রজ্যোতিবাবু জানিয়েছেন, আগামী ৬ অগস্ট, জামিন এবং আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হবে।