ঐতিহ্যের রেল সফরে বিপরীত চিত্র

দেড়শোয় কালকা মেল

তার জন্ম ১৮৬৬ সালে। প্রথমে নাম ছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান মেল। অনেকে সংক্ষেপে বলতেন ‘আপার ইন্ডিয়া’। পরে নাম পাল্টে হল কালকা মেল।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

জন্মদিনে। হাওড়া স্টেশনে শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

তার জন্ম ১৮৬৬ সালে। প্রথমে নাম ছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান মেল। অনেকে সংক্ষেপে বলতেন ‘আপার ইন্ডিয়া’। পরে নাম পাল্টে হল কালকা মেল।

Advertisement

পূর্ব রেল জানাচ্ছে, শুক্রবার ছিল কালকা মেলের দেড়শো বছরের জন্মদিন। এই নিয়ে এ দিন হাওড়া স্টেশনে একটি অনুষ্ঠানও করেছে রেল। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার আর কে গুপ্ত নিজে হাওড়া প্ল্যাটফর্মে গিয়ে কালকার যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান।

রেলের ইতিহাস বলছে, এই ট্রেন প্রথমে যেত হাওড়া থেকে পুরনো দিল্লি পর্যন্ত। তখনই তার নাম ছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান মেল। চালু হওয়ার দু’বছরের মাথায় তৎকালীন ভাইসরয় ল্যান্সডাউন আচমকা নির্দেশ দেন, গ্রীষ্মে কলকাতায় না-থেকে শৈলশহর সিমলায় গিয়ে দেশ চালাবেন তাঁরা। তখনই সিমলাকে গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে ব্রিটিশ সরকার। তড়িঘ়ড়ি সিমলা পর্যন্ত ট্রেন পরিষেবা চালু করাও দরকার হয়ে পড়ে। তখনই ঠিক হয়, ইস্ট ইন্ডিয়ান মেলটিকেই দিল্লি থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে কালকা পর্যন্ত। ট্রেনটির নাম পাল্টে নতুন নাম দেওয়া হয়, কালকা মেল।

Advertisement

এত ঘটা করে এই ট্রেনের জন্মদিন কেন পালন করা হল? পূর্ব রেল জানাচ্ছে, সে সময় কালকা মেল-কেই রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো মর্যাদা দেওয়া হতো। হাওড়া থেকে দিল্লি যাওয়ার তিনটি ট্রেন ছিল তখন। কালকা মেল, তুফান মেল ও পঞ্জাব মেল। কিন্তু রাজধানী এক্সপ্রেসের আগের যুগে কালকা মেলই ছিল একমাত্র ট্রেন, যেটা প্রায় ২৪ ঘণ্টায় পৌঁছত দিল্লি। গ্র্যান্ডকর্ড লাইন

(ভায়া গয়া) তৈরির পরে যাত্রা

পথের সময় কমাতে এই ট্রেনটিকেই প্রথম ওই লাইন দিয়ে কালকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজও এই রুটেই হাওড়া থেকে কালকা পর্যন্ত ১৭৪৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এই ট্রেন।

পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে-হেতু ভাইসরয় নিজে চড়তেন এই ট্রেনে, তাই রেলের নম্বরের তালিকায় কালকা মেলকে ১ আপ ও ২ ডাউন করে রাখা আছে। ব্রিটিশ সরকার চলে যাওয়ার পরে ভারতীয় রেল কর্তারাও এই নম্বর পাল্টাননি।’’ হেরিটেজ ট্রেনের তালিকাতেও রয়েছে এই ট্রেন। রেলের প্রাক্তন কর্তা সুভাষরঞ্জন ঠাকুর বলেন, ‘‘এই কালকা মেলে ভাইসরয় চড়বেন বলে হাওড়া স্টেশনে (৮-৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে) ও কালকা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দু’টি ক্যাবওয়ে তৈরি করা হয়েছিল। যাতে ভাইসরয় গাড়িতে চড়ে এসে সোজা ট্রেনের কামরায় উঠতে পারেন।’’ মহানিষ্ক্রমণের পথে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গোমো থেকে কালকা মেলেই উঠেছিলেন। বাক্স রহস্য সমাধানে সিমলার উদ্দেশে যাওয়ার সময় ফেলুদাকে এই ট্রেনে চড়িয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন