দলের ৩০ বছরের নেতাকে বনগাঁ উপ-নির্বাচনের আগে বহিষ্কার করল বিজেপি। তবে কিশোর বিশ্বাস নামে ওই নেতাকে সরানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে অস্বস্তি রয়েছে বিজেপি-শিবিরে।
বনগাঁ লোকসভা আসনে এ বারের বিজেপি প্রার্থী সুব্রত ঠাকুরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন কিশোরবাবু। শনিবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেন, “নির্দল প্রার্থী হিসেবে যিনি দাঁড়িয়েছেন, তাঁকে দল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে।” সিদ্ধান্ত জানাজানি হতেই ঘনিষ্ঠ মহলে অস্বস্তি লুকোননি বিজেপি-র স্থানীয় নেতাদের একটা বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য, “দীর্ঘদিন বনগাঁর মানুষ বিজেপি নেতা বলতে বুঝতেন কিশোর বিশ্বাসকে। ভোটের আগে সে লোককে সরিয়ে দেওয়া মানুষ ভাল ভাবে নেবেন তো?”
উপ-নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই দলের একাধিক নেতা প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানাচ্ছেন। এমনকী, অবরোধও করছেন। কিশোরবাবুকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি বাড়বে বলেই মনে করছেন জেলা রাজনীতির অনেকে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ১৯৮৫ সালে বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, তপন শিকদারের হাত ধরে বনগাঁয় বিজেপি করা শুরু করেন কিশোরবাবু। ১৯৯১ সালে বনগাঁ ও ১৯৯৬ সালে বাগদা বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র প্রার্থী হয়ে প্রায় ১৫% ভোটও পেয়েছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা যুব মোর্চার সম্পাদক, রাজ্য তফসিলি মোর্চার সহ-সভাপতির মতো বহু পদ সামলান লালকৃষ্ণ আডবাণী ঘনিষ্ঠ কিশোরবাবু। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় আডবাণীকে বনগাঁ নিয়ে গিয়ে সভা করানোর পিছনেও ভূমিকা ছিল তাঁর।
এলাকাবাসীরও একাশের দাবি, রাজ্যে যখন বিজেপি-র অস্তিত্ব প্রায় নেই বললেই চলে, সে সময় দল করতে গিয়ে অনেক বিদ্রুপ সহ্য করতে দেখা গিয়েছে ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী কিশোরবাবুকে। সহ্য করতে হয়েছে মারধরও। এ দিন দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে শুনে অনেকেই বিস্ময় লুকোতে পারেননি। কিশোরবাবু বলেন, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শত হামলাকে উপেক্ষা করে বিজেপি করেছেন তাঁদের বাদ দিয়ে, কোনও আলোচনা ছাড়াই প্রার্থী বাছা হয়েছে। প্যারাশু্যটে চড়ে বিজেপিতে আসা লোককে প্রার্থী করার প্রতিবাদে দল ছেড়ে ভোটে দাঁড়িয়েছি। বহিষ্কার করার কী আছে?”
বিজেপি প্রার্থী সুব্রত ঠাকুর অবশ্য বলেন, “কিশোরবাবু যা করেছেন, যা বলছেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। মানুষই বিবেচনা করে নেবেন আমি বহিরাগত কি না।”