দুর্নীতি অস্ত্র, পুরসভার সামনেই ভোট দামামা বাজাল বিজেপি

পুরযুদ্ধের জন্য দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে ময়দানে নামলেন বিজেপি নেতৃত্ব। লেক মল দুর্নীতি থেকে শুরু করে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগকে হাতিয়ার করেই রাজ্য নেতাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। লেক মল নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের চুক্তি ঘিরে আইন ভাঙা এবং রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১০
Share:

পুরসভার সদর দফতরের সামনে বিজেপি-র বিক্ষোভ সমাবেশে এস এস অহলুওয়ালিয়া, রাহুল সিংহ ও সিদ্ধার্থনাথ সিংহ।—নিজস্ব চিত্র।

পুরযুদ্ধের জন্য দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে ময়দানে নামলেন বিজেপি নেতৃত্ব। লেক মল দুর্নীতি থেকে শুরু করে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগকে হাতিয়ার করেই রাজ্য নেতাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।

Advertisement

লেক মল নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের চুক্তি ঘিরে আইন ভাঙা এবং রাজ্যের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। ওই চুক্তি বাতিলের দাবিতে শুক্রবার ধর্মতলায় পুরসভার সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা পুজোর আগেই ঘোষণা করে বিজেপি। পুজোর মধ্যে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ এবং তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের জেরে তৃণমূল এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের সাহায্য করার অভিযোগ ওঠায়, তা এ দিনের কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করেছে বিজেপি। আর দুর্নীতি থেকে সন্ত্রাস সব ক’টি সমস্যার একটাই দাওয়াই মিলেছে তাদের সভা থেকে তৃণমূলমুক্ত এবং বিজেপি-শাসিত বাংলা গড়তে হবে।

বিজেপির সমাবেশে দলের এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া থেকে শুরু করে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, রাজ্য নেতা প্রদীপ ঘোষ, রীতেশ তিওয়ারি এবং কাউন্সিলর বিজয় ওঝা, সুনীতা ঝাওয়ার, অভিনেতা জর্জ বেকার, জয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ছিলেন। সমাবেশে বিজেপি নেতাদের ছবি তুলতে দেখা যায় কিছু অত্যুৎসাহী পুরকর্মীকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন পুরসভামুখো হননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ কোনও মেয়র পারিষদই। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল ভবনে দলীয় বৈঠক থাকায়, তাঁরা এ দিন পুরসভায় যাননি। পুরভবনের গেটের সামনে এই সভা চলায় দুপুর থেকেই অস্বস্তিতে ছিল পুর প্রশাসনও। তাই বিজেপির সভায় কী বলা হচ্ছে, তা জানতে বার বার নিজেদের রক্ষীদের পাঠান পুরকর্তারা। পুরভবনের প্রবেশদ্বার ঘিরে রাখা হয় পুলিশ দিয়ে।

Advertisement

সিদ্ধার্থনাথ এ দিন ইঙ্গিত করেন, লেক মলের চুক্তিতে পুরসভার যে ২৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর সদলবল সিঙ্গাপুর সফরে খরচ হয়েছে। মমতার সিঙ্গাপুর সফরে ভেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা শ্রীকান্ত মোহতাও সঙ্গী ছিলেন। ত্রিফলা কেলেঙ্কারি, শহরে নীল-সাদা রং করাকে ঘিরে দুর্নীতি, সারদা-কাণ্ড প্রভৃতি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সিদ্ধার্থনাথ বলেন, “আমরা এখন দু নম্বরে। বিধানসভায় তৃণমূলকে ২০ গোল দিয়ে ছাড়ব।” তৃণমূলকে ‘টেরর মমতা করাপশন’ (টিএমসি) বলে কটাক্ষ করেন তিনি। ভেঙ্কটেশ কর্তাকে ‘নতুন সুদীপ্ত সেন’ বলে কটাক্ষ করেন রাহুলবাবু। তাঁর কথায়, “সামনে পুরভোট। কিন্তু সুদীপ্ত সেন তো জেলে! তা হলে তৃণমূলের ভোটের টাকা আসবে কোথা থেকে? নতুন এক সুদীপ্ত সেনের খোঁজ পেয়েছে তৃণমূল। তার অর্থে পুরভোট জেতার পরিকল্পনা করেছে তারা।”

বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যও এ দিনই মেদিনীপুরে দলীয় সভায় সারদা থেকে সন্ত্রাস সব বিষয়েই তৃণমূলকে বিঁধেছেন। জামাত-তৃণমূল যোগ ঢাকতে রাজ্য সরকার সচেষ্ট বলে অভিযোগ করে শমীকবাবু বলেন, “লুঠ-সন্ত্রাস ছিলই। যুক্ত হয়েছে দেশদ্রোহ। বারুদের স্তূপের উপর বসে আছে রাজ্য।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন