দল তাঁকে বহিষ্কার করে দেখাক, স্বপনের চ্যালেঞ্জ

দল তাঁকে বহিষ্কার করার সাহস দেখাতে পারবে না বলে দলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন সিউড়ির বিদ্রোহী তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলের ৩৯ জন বিধায়ক এবং ৬ জন সাংসদ তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। স্বপনবাবুর কথায়, “তাঁরা বলেছেন, ভবিষ্যতে আমার পাশে থাকবেন।” চলতি বছরেই ওই বিধায়ক এবং সাংসদরা মুখ খুলবেন বলেও স্বপনবাবুর দাবি। অন্য দলে গেলে তিন মাসের মধ্যে তিনি বিধায়ক পদ ছাড়বেন বলেও জানিয়েছেন স্বপনবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৬
Share:

বৃহস্পতিবার বিধানসভায় স্বপনকান্তি ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।

দল তাঁকে বহিষ্কার করার সাহস দেখাতে পারবে না বলে দলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন সিউড়ির বিদ্রোহী তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। তাঁর আরও দাবি, তৃণমূলের ৩৯ জন বিধায়ক এবং ৬ জন সাংসদ তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Advertisement

স্বপনবাবুর কথায়, “তাঁরা বলেছেন, ভবিষ্যতে আমার পাশে থাকবেন।” চলতি বছরেই ওই বিধায়ক এবং সাংসদরা মুখ খুলবেন বলেও স্বপনবাবুর দাবি। অন্য দলে গেলে তিন মাসের মধ্যে তিনি বিধায়ক পদ ছাড়বেন বলেও জানিয়েছেন স্বপনবাবু।

তৃণমূলের একাংশের দুর্নীতির প্রতিবাদে বুধবার বিধানসভা চত্বরে ধর্নায় বসেছিলেন স্বপনবাবু। সেই অপরাধে দল তাঁকে সে দিনই সাসপেন্ড করে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি সাসপেনশনের চিঠি পাননি। তাঁর বক্তব্য, “আমি এখনও সাসপেনশনের চিঠি পাইনি। পেলে দলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”

Advertisement

স্বপনবাবু এ দিন বিধানসভায় শাসক দলের বেঞ্চেই বসেছিলেন। যদিও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে স্বপনবাবুর জন্য আলাদা আসন বরাদ্দ করার আর্জি জানিয়েছেন।

স্বপনবাবু আক্ষেপ করেন, “আমার দলীয় সহকর্মীরা আমাকে এড়িয়ে চলেছেন। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। হেসেও সৌজন্য দেখাতে ভয় পেয়েছেন। এক জন জনপ্রতিনিধি দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যাবে না, এই নিয়ম হওয়া উচিত নয়।” তাঁর বক্তব্য, এ ভাবে সম্পর্ক নষ্ট করা দলীয় গঠনতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। আর যাঁরা রাজনীতি করতে এসেছেন, তাঁদেরও এত ভীত হয়ে থাকা মানায় না। তাঁদের মাথা উঁচু করে চলা উচিত। স্বপনবাবুর আশঙ্কা, বিধানসভার অধিবেশনে যে ক’দিন তিনি আসবেন, সে ক’দিনই তাঁকে এই অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হবে।

স্বপনবাবু জানান, তিনি তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু কোনও দিন দলীয় বৈঠকের চিঠি পাননি। তাঁকে বরাবর সংবাদপত্র থেকে ওই তথ্য জানতে হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব বলেছেন, দলের সম্পর্কে যাবতীয় বক্তব্য দলের ভিতরে জানাতে হবে। এই প্রেক্ষিতে স্বপনবাবুর দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি দলের ভিতরেই সরব হয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও পার্থবাবু-সহ কোনও নেতা এক বারও তাঁকে ডেকে তাঁর ক্ষোভের কারণ জানতে চাননি।

স্বপনবাবুর কথায়, “এত কিছুর পরেও বলা হচ্ছে, দলের ভিতরে বলা উচিত ছিল! পার্থবাবু কি বলবেন, কোন পদ্ধতিতে দলকে জানাতে হবে?”

একটি পুরনো মামলার জন্য এ দিন বারাসত কোর্টে গিয়েছিলেন স্বপনবাবু। কিন্তু সেখানে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলায় সেই মামলা এ দিন ওঠেনি। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মুকুলবাবু নতুন দল গড়লে তিনি কি যোগ দেবেন?

স্বপনবাবু বলেন, “মুকুল রায়ের সঙ্গে তিন মাস আমার কথা হয়নি। দল গঠন হবে কি না, সেটা পরের কথা। তবে এটা ঠিক যে, তৃণমূলে যদি কেউ ভাবেন, ব্যক্তির উপর নির্ভর করে গোটা দল চলছে, তা হলে সেটা ভুল ভাবছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন