চাকরি দেওয়ার নাম করে হাওড়ার গাদিয়ারার একটি হোটেলে দুই বাংলাদেশি তরুণীকে বিক্রি করেছিল পাচারকারীরা। গত নভেম্বরে সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ। ওই তরুণীদের কাছে পাওয়া বিভিন্ন সূত্র ধরেই সিআইডি গ্রেফতার করেছে নারী পাচারের এক চাঁই এবং তার সঙ্গিনী এক মহিলাকে। সিআইডি সূত্রের খবর, ধৃতের নাম রাকেশ ওরফে রাজু ভাই। সে আন্তর্জাতিক এক নারী পাচার-চক্রের চাঁই বলে দাবি তদন্তকারীদের। ধরা পড়েছে ওই চক্রের এক মহিলা সদস্যও। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মহিলার নাম আশা। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয়। ভবানী ভবন সূত্রে খবর, নভেম্বরে গাদিয়ারার একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় বাংলাদেশের দুই মহিলাকে। তাঁরা পুলিশকে জানান, বাংলাদেশ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁদের কলকাতার গিরিশ পার্কে নিয়ে আসে এক মহিলা। পরে তাঁদের তুলে দেওয়া হয় এক যুবকের হাতে।
সিআইডি সূত্রের খবর, ওই দুই মহিলা দাবি করেন, ওই যুবকের নাম রাকেশ। তার চেহারার বিবরণ নেয় পুলিশ। সিআইডি সূত্রের খবর, রাকেশের ফোন নম্বর জোগাড় করে বৃহস্পতিবার তাকে মহিলা বিক্রির টোপ দেওয়া হয়। সিআইডি-র হিউম্যান ট্রাফিকিং-এর ইনস্পেকটর শর্বরী ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গড়া হয় বিশেষ দল। ফোনের কথামতো বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালদহের জগৎ সিনেমার সামনে রাকেশ এলে তাকে গ্রেফতার করে ওই বিশেষ তদন্তকারী দল।
এক তদন্তকারী অফিসারের দাবি, রাকেশ-সহ পাচার-চক্রের বেশির ভাগই বাংলাদেশি নাগরিক। তদন্তকারীরা জেনেছেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে বনগাঁ, বসিরহাট, গাইঘাটা ও ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি তরুণীদের এ দেশে নিয়ে আসত রাজু ভাইয়ের বেশ কয়েক জন সঙ্গী। তারা এজেন্ট হিসেবে মোটা টাকা পেত রাজুর থেকে। ওই এজেন্টদের এ দেশে ঢুকতে সাহায্য করত রাজুর সঙ্গিনী আশা। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে এসে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কয়েক জন এজেন্টের বাড়িতে ওই তরুণীদের প্রথমে রাখা হয়। সেখান থেকে হাওড়া, ভুবনেশ্বর, বালেশ্বর, পুণে, আমদাবাদ, মুম্বই ও দিল্লির যৌনপল্লিতে ওই তরুণীদের পাচার করা হত। তদন্তকারীদের অনুমান, পাচার করা মহিলাদের অনেকেই বিভিন্ন যৌনপল্লিতে রয়েছেন।