নির্বাচনের জন্য শুরু ক্যামেরার খোঁজ

ক্লোজড সার্কিট হোক বা ডিজিটাল ভিডিও ক্যামেরা, বিধানসভা ভোটের প্রতিটি বুথে রেকর্ডিঙের ব্যবস্থা রাখতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দার্জিলিং জেলার প্রতিটি ব্লকে কত ক্যামেরা ভাড়া পাওয়া যাবে তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

ক্লোজড সার্কিট হোক বা ডিজিটাল ভিডিও ক্যামেরা, বিধানসভা ভোটের প্রতিটি বুথে রেকর্ডিঙের ব্যবস্থা রাখতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দার্জিলিং জেলার প্রতিটি ব্লকে কত ক্যামেরা ভাড়া পাওয়া যাবে তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কমিশন। সেই ক্যামেরা চালানোর জন্য কতজন প্রশিক্ষিত ব্যক্তি পাওয়া যাবে তাও জানতে চেয়েছে কমিশন।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব ভোট কেন্দ্রেই ক্যামেরা রাখতে হবে। গত লোকসভা ভোটে বাছাই করা বুথে ভোটগ্রহণের দৃশ্য (ভোট দেওয়ার ছবি ছাড়া) দেখানোর ব্যবস্থা ছিল। সেই ব্যবস্থায় যে কেউ দেশের যে কোনও প্রান্তে বসেই সেই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া দেখতে পেয়েছেন। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসিয়ে ওই ভোট কেন্দ্রগুলির ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছিল কমিশন। প্রত্যন্ত এলাকায় নেট যোগাযোগ না থাকার কারণে এই ব্যবস্থা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও স্পর্শকাতর বুথগুলিতে ভিডিও ক্যামেরা রাখার নির্দেশ ছিল গত লোকসভায়। ইনটারনেট সংযোগ থাকুক বা না থাকুক, স্পর্শকাতর হিসেব চিহ্নিত না হলেও বিধানসভা ভোটের সব বুথে ক্যামেরা রাখতে চাইছে কমিশন। ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগে থেকে শেষ পর্যন্ত বুথের যাবতীয় কর্মকাণ্ড রেকর্ডিং করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কোথায় কত ভিডিও ক্যামেরা পাওয়া যাবে, সেই ক্যামেরা কারা চালাতে পারবেন সব তথ্য জোগাড় করে রাখতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্ট পাঠাতেও হয়েছে। আমরা সেই মতো পদক্ষেপ করেছি।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথমত সব বুথে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো সম্ভব কিনা তা জানতে চেয়েছিল কমিশন। যদিও সব বুথে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল বলে, ম্যানুয়াল অর্থাৎ হাতে ধরে চালানোর ক্যামেরার তথ্যও চাওয়া হয়েছে। মাস তিনেক আগেই শিলিগুড়িতে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। নকশালবাড়ি ব্লকে সে সময় ভোট গণনা কেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। ডিসিআরসি কেন্দ্রেও ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ছিল। ক্যামেরার ভাড়া করার দরপত্র চেয়ে টাকার অঙ্ক দেখে চমকে উঠেছিলেন প্রাশাসনের কর্তারা। তারপরেই ব্লক প্রশাসন থেকে ওই ক’টি ক্যামেরা কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ বারে প্রতিটি বুথে ক্যামেরার ব্.বস্থা করতে হলে, শুধু ভোটকেন্দ্র পিছু একটি করে রাখলে হবে না। কোনও কোনও কেন্দ্রে দু’টি বা তিনটি করে বুথ রয়েছে। সে অনুযায়ী ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে। শেষ মুহূর্তে কোনও ক্য়ামেরা বিগড়ে যেতে পারে, তার জন্য একটি করে বিকল্প ক্যামেরাও রাখতে হবে বলে প্রসাসন সূত্রের খবর। নকশালবাড়ির বিডিও কিংশুক মাইতি বলেন, ‘‘সে সময়ের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাগুলিও আমাদের হাতে রয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছি। সেই সঙ্গে ব্লকের মধ্যে কারা পেশাদারি ভাবে ক্যামেরা চালাতে পারেন তাঁদের তালিকা করা হয়েছে। কারা ক্যামেরা ভাড়া দেন সে তালিকাও তৈরি চলছে। প্রচুর ক্যামেরা প্রয়োজন, সে কারণে সর্বত্র খোঁজখবর চালানো হচ্ছে।’’

জাল ভোট, রিগিং, বুথ দখলের মতো অভিযোগ রুখতেই সব কেন্দ্রে ক্যামেরা বসিয়ে কমিশন ভোট করাতে চাইছে বলে প্রশাসনের আধিকারিকদের অনেকেই মনে করছেন। এ ছাড়াও কোনও বুথে ভিডিও রেকর্ডিং করা হলে অশান্তির প্রবণতা কমে বলে দাবি। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, গত লোকসভা ভোটে দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি জেলার যে সব কেন্দ্রে ‘লাইভ স্ট্রিমিঙে’র ব্যবস্থা ছিল, সেখানে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। শুধু ক্যামেরা নয়, ইতিমধ্যে কমিশনের থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থাও সেরে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন ভবনে কত বাহিনী থাকতে পারে তার হিসেব চাওয়া হয়েছিল।

কমিশনের নির্দেশে ভোট ঘোষণার আগেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জায়গা চিহ্নিত করে ফেলেছে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। এ বার প্রতি ব্লকে কত ক্যামেরা মিলবে তা জানতে চেয়েছে কমিশন। প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনী, পরে ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে সক্রিয় হওয়ায়, প্রশাসনের আধিকারিকরা মনে করছেন, শহর হোক বা প্রত্যন্ত এলাকা আগামী বিধানসভা ভোটে প্রতিটি বুথই কমিশনের পূর্ণ নজরদারিতে থাকবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement