নির্যাতিতার পাশে রূপা

সাত্তোরের বিজেপি কর্মীর স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে, শাসকদল তৃণমূল ও পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করে দিলেন সদ্য বিজেপিতে পা রাখা বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়ে বুধবার সকালে অভিনেত্রী বলেন, “নির্যাতনের ঘটনা নৃশংস। এহেন কাজ যারা করেছে তাদের বলি, এ রাজ্যে বিজেপি খুব শীঘ্রই ক্ষমতায় আসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাড়ুই শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৩
Share:

ঠিক কী হয়েছিল সে-দিন? নির্যাতিতার বয়ান মোবাইলে রেকর্ড করছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। নির্যাতিতা জানান, অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার না করা হলে এসপি-র অফিসের সামনে ধর্নায় বসবেন তিনি। বুধবার পাড়ুইয়ের সাত্তোরে। —নিজস্ব চিত্র।

সাত্তোরের বিজেপি কর্মীর স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে, শাসকদল তৃণমূল ও পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করে দিলেন সদ্য বিজেপিতে পা রাখা বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়ে বুধবার সকালে অভিনেত্রী বলেন, “নির্যাতনের ঘটনা নৃশংস। এহেন কাজ যারা করেছে তাদের বলি, এ রাজ্যে বিজেপি খুব শীঘ্রই ক্ষমতায় আসছে। তখন আমরাই পরিচালন করব রাজ্যটাকে। তখন তাঁরা কোথায় যাবেন?” এ দিন নির্যাতিতা অবশ্য বলেন, দিন কয়েক পরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসবেন তিনি। তাঁর দাবি করেন, “অভিযুক্ত পুলিশ এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই ঘটনার এতদিন পরেও কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ।”

Advertisement

ঘটনা হল, এক অভিযুক্তকে ধরার নামেই পাড়ুই থানার সাত্তোরের বিজেপি কর্মীর স্ত্রীকে তাঁর বাপের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর গাছে বেঁধে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে বীরভূমের পুলিশ এবং সাত্তোরের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পাড়ুই থানায় লিখিত অভিযোগও করেছে নির্যাতিতার স্বামী। বর্তমানে নিজের বাড়িতেই ওই নির্যাতিতা চিকিত্‌সাধীন। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ সাত্তোরের বাস স্ট্যান্ড পাড়ায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের পিছনে নির্যাতিতার বাড়িতে যান রূপাদেবী। সবিস্তারে শোনেন, সেই দিনের ঘটনার কথা। মোবাইলে সমস্ত কথোপকথন রেকডিং করেন তিনি। আশ্বাস দেন, সব রকমের সহযোগিতার।

এ দিন রূপার সঙ্গে ছিলেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্থানীয় নেতৃত্ব। রূপার কথার সূত্র ধরে জয় বলেন, “সংখ্যালঘু ভোটের আশায়, যা খুশি তাই করছে তৃণমূল সরকার। রাজ্য জুড়ে হিংসা, অপরাধ এবং অপরাধী তৈরি করছে তৃণমূল। আমরা শেষ দেখে ছাড়ব।” তিনিও এ দিন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। অন্যদিকে নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি। বুধবার দুপুরে ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ধীরাজ সেনগুপ্ত এবং জেলা কমিটির পক্ষে শৈলেন মিশ্র, সংগঠনের তিন জন সদস্যাকে নিয়ে বারো জনের একটি প্রতিনিধি দল যায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। সমস্ত ঘটনার কথা লিপিবদ্ধ করেন তাঁরা। এ দিনই তাঁরা বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে তাঁরা স্মারকলিপি দেন জেলার ডিএসপিকে। শৈলেনবাবু বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমরা আর্জি রেখেছি, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদেরবিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”

Advertisement

অন্য দিকে, বুদবুদের কলমডাঙ্গায় পাড়ুইয়ের নির্যাতিতার বাবা ও মাকে মারধোরের অভিযোগে পুলিশ মঙ্গলবার কলমডাঙ্গার এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সাহাদাত মন্ডল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২৩ জানুয়ারি সাত্তোরের নির্যাতিতার বাবা কলমডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, ওই দিন দুপুরে ধৃত-সহ আরও কয়েকজন গ্রামের বাসিন্দা তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে মারধোর করে। লাঠি, রড দিয়ে তাঁদেরকে মারধর করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ সাহাদাত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন