নাশকতার নালিশ নেই, ১৮ মাসে জামিন ৩ জনের

বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-তে মামলা হওয়ায় জেলে ইতিমধ্যেই কেটে গিয়েছে দেড় বছর। অবশেষে সোমবার মাওবাদী নেতা সন্দেহে ধৃত অভিষেক মুখোপাধ্যায়-সহ সেই তিন জনের জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অভিষেক মাওবাদীদের কলকাতা সিটি কমিটির সম্পাদক এবং সংগঠনে তাঁর নাম অরণ্য বলে অভিযোগ করেছিল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৪ ০৪:২৪
Share:

বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-তে মামলা হওয়ায় জেলে ইতিমধ্যেই কেটে গিয়েছে দেড় বছর। অবশেষে সোমবার মাওবাদী নেতা সন্দেহে ধৃত অভিষেক মুখোপাধ্যায়-সহ সেই তিন জনের জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অভিষেক মাওবাদীদের কলকাতা সিটি কমিটির সম্পাদক এবং সংগঠনে তাঁর নাম অরণ্য বলে অভিযোগ করেছিল পুলিশ। বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন অভিষেক এবং তাঁর দুই সঙ্গী সুনীল মণ্ডল ও সুভাষ রায়ের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে জানিয়ে দেয়, তাঁদের বিরুদ্ধে নাশকতার কোনও অভিযোগ নেই। এই ব্যাপারে সর্বোচ্চ আদালতের একটি রায়ের কথা তোলেন বিচারপতি। তিনি জানান, কোনও নিষিদ্ধ দলের সদস্য হলেই কেউ নাশকতার সঙ্গে যুক্ত, তা বলা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্ট আগেই রায় দিয়েছে। তাই ওই তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। তিন জনই এখন প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন।

২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টালা পার্ক এলাকা থেকে অভিষেক, সুনীল ও সুভাষকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। পুলিশ তখন বলেছিল, ধৃতদের কাছে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ছ’রাউন্ড গুলি এবং কিছু মাওবাদী পুস্তিকা পাওয়া গিয়েছে। এসটিএফ জানিয়েছিল, সুনীল ওরফে নীল কলকাতা সিটি কমিটির অন্যতম সদস্য। তিন জনের বিরুদ্ধেই ইউএপিএ-তে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। অভিষেকের স্ত্রী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী দেবলীনা চক্রবর্তীকে পুলিশ ২০১২-র এপ্রিলে নোনাডাঙা উচ্ছেদ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এবং মাওবাদী নেত্রী সন্দেহে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধেও ইউএপিএ-তে মামলা রুজু করা হয়। দেবলীনা অবশ্য ছ’মাস পরে জামিনে মুক্তি পান।

Advertisement

চন্দননগরের বাসিন্দা অভিষেক সিঙ্গুর কাণ্ডের সময়, ২০০৬-এর ডিসেম্বরে কলকাতায় একটি মোটরগাড়ির শো-রুম ভাঙচুর করে প্রথম গ্রেফতার হন। সেই মামলায় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই ২০০৭ সালে গা-ঢাকা দেন। পরে তিনি মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজির তত্ত্বাবধানে জঙ্গলমহলে অস্ত্র-প্রশিক্ষণ নেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

মাওবাদী নেতা সন্দেহে ধৃত এবং ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত সব্যসাচী গোস্বামীর জামিন গত সপ্তাহে মঞ্জুর করেছে আদালত। গত বছর এপ্রিলে এসটিএফ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, অভিষেকের আগে সব্যসাচী ওরফে কিশোর মাওবাদীদের কলকাতা সিটি কমিটির সম্পাদক ছিলেন। ওই কমিটির অন্যতম সদস্য সন্দেহে গত অগস্টে ধৃত জয়িতা দাস এ বছরের গোড়ায় জামিন পান। তাঁর বিরুদ্ধেও ইউএপিএ-তে মামলা রুজু করা হয়। তবে ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত ও মাওবাদী কার্যকলাপে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া কলকাতার প্রসূন চট্টোপাধ্যায়, রাজা সরখেল ও গৌর চক্রবর্তী এবং লালগড়ের ছত্রধর মাহাতোর মতো অনেকে এখনও জামিনে মুক্তি পাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন