উৎসবের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চটুল মোচ্ছবে আপত্তি জানিয়েছিলেন আগেই। এ বার নাম না করে নিজের দলের ছাত্র সংগঠনকেই কড়া বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানালেন, নবীন বরণ জাতীয় উৎসবের নামে এমন কিছু করা চলবে না, যা এ রাজ্যের সংস্কৃতিতে বেমানান। পাশাপাশি, শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
বিতর্কের সূত্রপাত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক নবীন বরণ অনুষ্ঠান নিয়ে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদ গত বুধবার ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রেক্ষাগৃহ অন্ধকার করে, দরজায় ছিটকিনি দিয়ে, সাইকেডেলিক আলোয় জগঝম্প নাচা-গানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হল কার্যত নাইট ক্লাবের চেহারা নেয়। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ওই অনুষ্ঠানকে ‘খুবই আপত্তিকর’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠান দেখতেও যাননি তিনি।
এর আগে রবীন্দ্রভারতীতে ছাত্র সংসদের ঘরে জামা খুলে নাচানাচি, ভাঙড় কলেজের একটি অনুষ্ঠানে বাইরের শিল্পীদের এনে চটুল নাচ-গানের আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছিল টিএমসিপি-র বিরুদ্ধেই।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)-র রাজ্য সম্মেলনে পার্থবাবু বলেন, “নবীন বরণ উৎসবে বাইরের লোক এনে হট্টগোল করা মোটেই উচিত নয়।” তাঁর মতে, উৎসবে বাইরের দু’এক জন শিল্পী আসতেই পারেন। কিন্তু তাঁদের নাচ-গান যদি রাজ্যের সংস্কৃতিকে বিড়ম্বনায় ফেলে, তা হলে সে ধরনের উৎসব থেকে ছাত্রছাত্রীদের সাবধান থাকতে হবে। এ ভাবে তিনি টিএমসিপি-কেই সংযত হওয়ার বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও মন্ত্রী এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেননি।
টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র পরে বলেন, “সাংগঠনিক ভাবে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একমত। আমরাও চাই, অনুষ্ঠানে আধুনিকতার ছোঁয়া থাক, তবে তার মধ্যে যেন সংস্কৃতি ও শালীনতাও থাকে।” তা হলে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদগুলির বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ উঠছে কেন, তার সদুত্তর মেলেনি অশোকবাবুর কাছে।