বিধাননগর, বালি বা আসানসোলের কোথাও কাল কোনও পুনর্নির্বাচনের প্রশ্ন নেই। দায়িত্ব নিয়েই জানিয়ে দিলেন অস্থায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আদৌ কোনও পুনর্নির্বাচন হবে কি না, বা আগের ঘোষণা মতো শুক্রবার ভোট গণনা হচ্ছে কি না, এ নিয়েও চূড়ান্ত কিছু জানাতে পারলেন না নতুন কমিশনার। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে, জানালেন আলাপনবাবু।
রাজ্যের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন কমিশনার থাকাকালীন পরিবহণ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন না আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। খবর নবান্ন সূত্রে। রাজ্য সরকারের সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যত দিন স্থায়ী নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ না হচ্ছে, তত দিন আলাপনবাবুই দায়িত্ব সামলাবেন। অস্থায়ী নির্বাচন কমিশনার পদে থাকাকালীন তাঁর হাতে এত দিন থাকা পরিবহণ দফতরের কাজ সামলাবেন মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র।
বুধবারই থিম্পু থেকে ফিরেছেন আলাপনবাবু। বৃহস্পতিবার পুনর্নির্বাচন হচ্ছে কি না, তা তিনি এ দিন জানাননি। কলকাতা বিমানবন্দরে পা রেখেই তিনি জানান, যে বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচনের কথা কমিশন ভাবছে, সেখানে বৃহস্পতিবারই ভোটগ্রহণ করা যাবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক অবশ্য অব্যাহত। তিনি রাজ্য সরকারের পরিবহণ সচিবের পদ ছেড়ে দেওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক? সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলাপন সাময়িকভাবে রাজ্য সরকারের সচিব পদ ছাড়ছেন। অবসর নিচ্ছেন না। তাই প্রকারান্তরে রাজ্য সরকারের অধীনেই তিনি রয়ে যাচ্ছেন। আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ বললেন, ‘‘ধরা যাক ৭ দিনের জন্য আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে বসানো হল। তার মানে সাত দিন পর তিনি আর নির্বাচন কমিশনার থাকবেন না। আবার রাজ্য সরকারের সচিব হিসেবেই তাঁকে কাজ করতে হবে। সচিবদের সার্ভিস বুক মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে। সার্ভিস রেকর্ড পরিচ্ছন্ন রাখার তাগিদেই আলাপনবাবু নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী প্রধান থাকাকালীন কোনওভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অখুশি করার মতো সিদ্ধান্ত নেবেন না।’’ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রসঙ্গও উঠেছিল। আলাপনবাবুর জবাব, ‘‘আইনসম্মতভাবে নির্বাচিত সরকার আইনসম্মতভাবে আমাকে নির্দেশ দিয়েছে। আমি সেই নির্দেশ পালন করছি মাত্র।’’ এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে মঙ্গলবারই পদত্যাগ করেচেন। তবে পদত্যাগের আগের দিন, সোমবার, তিনি জানিয়েছিলেন, ৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার কিছু বুথে আবার ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ভোটের দিন শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক রিগিং-এর যে অবিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে ওই বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। কিন্তু, পুনর্নির্বাচনের সেই ঘোষণা মৌখিত ছিল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন পুনর্নির্বাচনের জন্য কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি। তার আগেই সুশান্তবাবু পদত্যাগ করেন।