প্রতীক-বিভ্রাট, টর্চ হাতে সমীর, গ্লাস ধরল এস ইউ সি

বড় দলের ভিড়ে তাদের লড়াই এমনিতেই কঠিন। তার উপরে প্রতীক-বিভ্রাট এ বার কাজ আরও জটিল করে তুলেছে এসইউসি, পিডিএসের মতো ছোট দলগুলির জন্য! গত কয়েক বছর ধরে যে সব চেনা প্রতীক নিয়ে এসইউসি বা পিডিএস ভোটে লড়ে, এ বার তার অদল-বদল ঘটেছে। বাধ্য হয়েই অচেনা প্রতীক নিয়ে মানুষকে চেনাতে নেমেছে তারা! রাজ্যে শেষ পর্বের লোকসভা ভোটের জন্যও বৃহস্পতিবার থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪১
Share:

বড় দলের ভিড়ে তাদের লড়াই এমনিতেই কঠিন। তার উপরে প্রতীক-বিভ্রাট এ বার কাজ আরও জটিল করে তুলেছে এসইউসি, পিডিএসের মতো ছোট দলগুলির জন্য!

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে যে সব চেনা প্রতীক নিয়ে এসইউসি বা পিডিএস ভোটে লড়ে, এ বার তার অদল-বদল ঘটেছে। বাধ্য হয়েই অচেনা প্রতীক নিয়ে মানুষকে চেনাতে নেমেছে তারা! রাজ্যে শেষ পর্বের লোকসভা ভোটের জন্যও বৃহস্পতিবার থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং তখনই দেখা যাচ্ছে, ছোট দুই বামপন্থী দলের প্রতীক এমন ভাবে রদবদল হয়েছে যে, গুলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না দু’দলের নেতারাই।

পিডিএসের সমীর পূততুণ্ড যেমন এ দিনই ডায়মন্ড হারবার আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। দল তৈরির সময় থেকেই সমীরবাবুরা ভোটে লড়ে আসছেন জোড়া মোমবাতি প্রতীকে। কিন্তু এ বার তাঁর ভাগ্যে মোমবাতি জোটেনি! কোনও প্রতীক বরাদ্দ হচ্ছিল না বলে নির্বাচনী ময়দানে প্রচার চালাতে যথেষ্ট অসুবিধাই হচ্ছিল তাঁদের। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে এ দিন সমীরবাবু আশ্বাস পেয়েছেন, ওই কেন্দ্রে তাঁকে টর্চ প্রতীক দেওয়া হবে। তার পরেই নতুন পোস্টার তৈরির বরাত দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সমীরবাবুর কথায়, “আমরা মোমবাতিই চেয়েছিলাম। কিন্তু অন্য দল আগে চেয়ে রেখেছে, এখন তারা অভিযোগ করলে জটিলতা হবে, এই কারণ দেখিয়ে ওই প্রতীক দেওয়া হয়নি। এর ফলে যেটা হল, রাজ্যে ৬টি আসনে আমাদের জোড়া মোমবাতি এবং দু’টি আসনে টর্চ নিয়ে আমাদের লড়তে হবে!”

ডায়মন্ড হারবার ছাড়া দক্ষিণ মালদহেও টর্চ জ্বলেছে পিডিএসের জন্য! বাকি ৬ আসনে মোমবাতির আলো!

কিন্তু ডায়মন্ড হারবারে লড়াইয়ে আছে এসইউসি-ও। সাম্প্রতিক কালে যারা টর্চের আলোতেই ভোটের রাস্তা খুঁজেছে! এ বার তাদের টর্চের আশায় জল ঢেলে কমিশন এসইউসি-কে দিয়েছে গ্লাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এসইউসি পরিচিত দল। সেই জেলারই একটি কেন্দ্রে তাদের পুরনো প্রতীক নিয়ে অন্য দল লড়বে আবার এসইউসি-র হাতে নতুন গ্লাস, বিষয়টি জনতার কাছে বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠতেই পারে। এসইউসি-র রাজ্য কমিটির সদস্য অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমরা এ বারও টর্চ চেয়েছিলাম। কিন্তু অন্য একটি দল আগে দাবি করেছে এবং তারা আরও বেশি আসনে লড়বে, এই রকম কারণে টর্চ আমরা পাইনি। এখন ডায়মন্ড হারবারেই টর্চ দেওয়া হচ্ছে আর একটি দলকে, ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত বটেই!”

ছোট দলগুলিকে লড়তে হয় নির্বাচন কমিশনের তালিকাভুক্ত ‘ফ্রি সিম্বল’ বেছে নিয়ে। নথিভুক্ত কিন্তু স্বীকৃত নয়, এমন দলগুলির মধ্যে যারা একাধিক রাজ্যে বেশি আসনে লড়ে, তারা ‘কমন সিম্বল’ পায়। এসইউসি আগে লড়ত সাইকেল চিহ্নে। সমাজবাদী পার্টির জন্য সাইকেল সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তাদের হাতে ছিল কুঠার। তার পরে টর্চ এবং এখন গ্লাস। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন যেমন এ বার পেয়েছে তিন তারা-চিহ্নিত পতাকা।

কমিশন সূত্রের বক্তব্য, ‘ইলেকশন সিম্বলস্ (রিজার্ভেশন অ্যান্ড অ্যালটমেন্ট) অর্ডার, ১৯৬৮’ অনুযায়ী অনুচ্ছেদ ১০ এবং ১০বি-তে যে ভাবে প্রতীক বিতরণের কথা বলা আছে, সেই নিয়ম মেনেই কাজ করা হচ্ছে। আইনের ব্যাখ্যায় অবশ্য ছোট দলের বিড়ম্বনা কাটছে না! সমীরবাবুর কথায়, “আমি এই জেলায় কাজ করেছি। মুখটা লোকে চেনে বলে তা-ও একটা সুবিধা আছে।”

প্রতীক-বিভ্রাটের মধ্যেই আজ, শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে সমীরবাবুর হয়ে প্রচারে যাচ্ছেন বহিষ্কৃত সিপিএম নেতা আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন