প্রতারণার নালিশ, লগ্নি সংস্থার কর্তা গ্রেফতার

কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থার কর্তাকে গ্রেফতার করল কোলাঘাট থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে হাওড়ার বাগনানের বাড়ি থেকে সৌরভ দত্ত নামে ওই ব্যক্তিকে ধরা হয়। ধৃতকে মঙ্গলবার তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “বেসরকারি লগ্নি সংস্থার ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৫
Share:

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সৌরভ দত্তকে। —নিজস্ব চিত্র।

কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থার কর্তাকে গ্রেফতার করল কোলাঘাট থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে হাওড়ার বাগনানের বাড়ি থেকে সৌরভ দত্ত নামে ওই ব্যক্তিকে ধরা হয়। ধৃতকে মঙ্গলবার তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “বেসরকারি লগ্নি সংস্থার ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নিউল্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে বেসরকারি ওই লগ্নি সংস্থার প্রধান অফিস ছিল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর দীপঙ্কর দে, চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার সৌরভ দত্ত-সহ আরও কয়েকজন কর্তা রয়েছেন। ২০১১ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট শহরের নতুনবাজারে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে ওই সংস্থার কর্পোরেট অফিস খোলা হয়েছিল। ওই সংস্থার তরফে আমানতকারীদের তিন বছরে দেড় গুণ ও পাঁচ বছরে দ্বিগুণ টাকা ফেরতের লোভ দেখিয়ে টাকা সংগ্রহ চলছিল। এ ভাবে ওই অফিস থেকেই পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার এজেন্টদের মাধ্যমে আমানতকারীদের থেকে কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল ওই সংস্থা।

এজেন্ট ও আমানতকারীদের অভিযোগ, সারদা কাণ্ডের পর আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হয় কোলাঘাটের কর্পোরেট অফিস। এরপর ওই সংস্থার কোলাঘাটের এজেন্ট ও আমানতকারীদের একাংশ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে গিয়ে সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে টাকা ফেরতের দাবি জানান। প্রথম দিকে টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হলে ধীরে ধীরে গা ঢাকা দিতে থাকেন সংস্থার সব কর্তারা। সেই সময় বেশ কয়েকজন এজেন্ট ও আমানতকারী ওই সংস্থার কর্তাদের বিরুদ্ধে কোলাঘাট থানায় আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। কোলাঘাটের বাসিন্দা গৌতম দাস বলেন, “ওই লগ্নি সংস্থায় আমি ১০ লক্ষ টাকা রেখেছিলাম। সারদা কাণ্ডের পর সংস্থার অফিস বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়ি। টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য একাধিকবার সংস্থার প্রধান অফিসে গিয়েছিলাম। কিন্তু টাকা ফেরত পাইনি।” ওই সংস্থার এজেন্ট গোপাল রায় বলেন, “প্রথমে আমানতকারী হিসেবে ওই সংস্থায় টাকা রেখেছিলাম। পরে এজেন্ট হিসেবে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংস্থায় জমা দিয়েছিলাম। অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমানতকারীরা টাকা ফেরানোর জন্য আমাদের চাপ দিচ্ছিল। এ বার আমরা কী করব।”

Advertisement

কিন্তু প্রায় দেড় বছর আগে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও ওই সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতারে উদ্যোগী হয়নি পুলিশ। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওই সংস্থার দুই মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার মিলিয়ে প্রায় তিনশ’ জন এজেন্ট ও আমানতকারী কোলাঘাট শহরে মিছিল করে। ওই লগ্নি সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতার ও আমানতকারীদের টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখায় ও স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। এরপরই মঙ্গলবার ভোরে হাওড়ার বাগনান এলাকার বাড়ি থেকে ওই সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার সৌরভ দত্তকে গ্রেফতার করে কোলাঘাট থানার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন