পাহাড় প্রসঙ্গে সব দলকেই তোপ অধীরের

পাহাড় প্রসঙ্গে বাম, বিজেপি, তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিদায়ী রেলপ্রতিমন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শুক্রবার শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার সভায় এ ভাবেই বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেন ‘বাংলার রবিনহুড’। ‘বাংলা ভাগ হতে দেব না’ এই কথা বলে বাংলার মানুষের আবেগ নিয়ে রাজনীতি জ্যোতি বসুর জমানা থেকেই হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ তুললেন। অধীরবাবুর কথায়, জ্যোতি বসু বলেছিলেন ‘রক্ত দেব কিন্তু বাংলা ভাগ হতে দেব না’। অথচ সেই থেকে উত্তরবঙ্গের, পাহাড়ের উন্নয়ন হয়নি। তা করলে পাহাড় নিয়ে সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপিকে সংকীর্ণ রাজনীতি করতে হত না বলে তিনি দাবি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:২০
Share:

পাহাড় প্রসঙ্গে বাম, বিজেপি, তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিদায়ী রেলপ্রতিমন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শুক্রবার শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার সভায় এ ভাবেই বিরোধীদের কড়া সমালোচনা করেন ‘বাংলার রবিনহুড’। ‘বাংলা ভাগ হতে দেব না’ এই কথা বলে বাংলার মানুষের আবেগ নিয়ে রাজনীতি জ্যোতি বসুর জমানা থেকেই হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ তুললেন। অধীরবাবুর কথায়, জ্যোতি বসু বলেছিলেন ‘রক্ত দেব কিন্তু বাংলা ভাগ হতে দেব না’। অথচ সেই থেকে উত্তরবঙ্গের, পাহাড়ের উন্নয়ন হয়নি। তা করলে পাহাড় নিয়ে সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপিকে সংকীর্ণ রাজনীতি করতে হত না বলে তিনি দাবি করেন।

Advertisement

তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বিমল গুরুঙ্গ কখনও বলেননি গোর্খাল্যান্ড চাই না। অথচ ব্রিগেডের সভায় তাঁকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিতে চাইলেন বিমল গুরুঙ্গরা তাঁর লোক। তাঁর সঙ্গে আছেন। এই রাজনীতি কংগ্রেস কখনও করেনি। এই রাজ্য সরকারের আমলে দার্জিলিঙের অর্থনীতি এবং পরিবেশ (ইকোনমি এবং ইকোলজি) দুটোরই বারোটা বেজেছে।” পাহাড়ে প্রচারে গিয়েও কংগ্রেস একথা জানাবে। পাহাড় প্রশ্নে বিজেপি’র দিকে সুর চড়িয়ে জানান, বিজেপির ‘ললিপপ’ যেন পাহাড়বাসী ভুলে না যান। এখন বিজেপি যা বলছে তা ভোটের জন্য। সত্যি চাইলে জানাত ‘গোর্খাল্যান্ড’ করে দেবে। বিজেপি-তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এখন ওদের মধ্যে ঝগড়া চলছে। ক’দিন আগে ছিল না। ব্রিগেডের সভায় মোদী মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলা লাড্ডু নেওয়ার জন্য এবং দিল্লির লাড্ডু তারা নেবে বলেছিল। কে কোন লাড্ডু পাবে আমরা তা দেখতে চাই। বাংলার মানুষ তৃণমূলকে লাড্ডু দেবে! তবে তা তিতা লড্ডু।’’ নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে জানান, উনি সভা করে গেলেন বড় বড় কথা বললেন। একটা জিনিস শিখলেন না।

সিপিএমকে একহাত নিয়ে জানান, এক সময় রাজীব গাঁধীর উদ্যোগে পাহাড়ের শান্তির জন্য রাজ্য, কেন্দ্র, পাহাড়ের নেতৃত্বকে নিয়ে দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল (ডিজিএইচসি) তৈরি হয়। কেন্দ্র উন্নয়নের জন্য প্রচুর টাকা বরাদ্দ দেয়। সেই টাকা ঠিক মতো খরচের বিষয়টি রাজ্যের দেখা দরকার ছিল। অভিযোগ, বামেরা সেই দায়িত্ব পালন না করে টাকা লুঠ করতে দিয়েছে। তাঁরা অপেক্ষা করছিল সুবাস ঘিসিং কবে দুর্নীতি করবে। তার পর তারা তাঁকে তাড়াবেন। চোরকে চুরি করতে দেবেন আর চুরি করলে শাস্তি দেবেন। সিপিএমের েই পাশা উল্টে দিয়েছে বিমল গুরুঙ্গরা। অধীরবাবু বলেন, “কংগ্রেস সেই সংকীর্ণ রাজনীতি করেনি। আমরা সমস্ত জাতির নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি উন্নতির দাবি করি।”

Advertisement

অধীরবাবুর কথার জবাবে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, “অধীরবাবুকে জিজ্ঞাসা করব ১৯৯১ সালে এবং ২০০৪ সালে ওই জিএনএলএফের সমর্থন নিয়েই তাঁরা কেন পাহাড়ে জিতেছিলেন। সে সময় তাদের এ কথাগুলি কী মনে ছিল না।” বিজেপি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু জানান, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সময় থেকে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতালের লাড্ডু দেখাচ্ছে কংগ্রেস। ১০ বছরের বেশি কেটে গেল। রথীন্দ্রবাবুর কথায়, “কংগ্রেসের মুখে এ সব কথা মানায় না।” তৃণমূল নেতৃত্বও অধীরবাবুর ওই সমস্ত বক্তব্য গুরুত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

এ দিন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সুজয় ঘটক এবং জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের সুখবিলাস বর্মার সমর্থনে বাঘা বাঘা যতীন পার্কে ওই সভা হয়। তা ছাড়া আলিপুরদুয়ারে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং হলদিবাড়িতে সভা করেন অধীর চৌধুরী। আলিপুরদুয়ারের সভায় ছিলেন দেবপ্রসাদ রায়-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন