পলাতকদের ছবি কই, ফের পুলিশকে তিরস্কার কোর্টের

পরপর তিন দিন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে লাগাতার অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার কান্দিতে কিশোরী নিখোঁজের ঘটনার পরে মঙ্গলবার রিজেন্ট পার্ক থানার তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। বুধবার তাঁর অসন্তোষ ব্যক্ত হল নদিয়ার শান্তিপুরের এক কিশোরী অপহরণের ঘটনায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৬
Share:

পরপর তিন দিন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে লাগাতার অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

সোমবার কান্দিতে কিশোরী নিখোঁজের ঘটনার পরে মঙ্গলবার রিজেন্ট পার্ক থানার তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। বুধবার তাঁর অসন্তোষ ব্যক্ত হল নদিয়ার শান্তিপুরের এক কিশোরী অপহরণের ঘটনায়।

বিচারপতি এ দিন মন্তব্য করেন, “অভিযুক্তরা ও অপহৃত কিশোরী কোথায় রয়েছে, পুলিশ সব জানে! তা সত্ত্বেও কিশোরী এখনও উদ্ধার হয়নি।”

Advertisement

ঘটনাটি কী?

সতেরো বছরের একটি মেয়ে গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ। তার বাবা শান্তিপুর থানার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি ন’জনের নামে এফআইআর দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, মূল অভিযুক্ত সাহেব আলি নামে এক যুবক-সহ চার জন পলাতক। তবে সাহেবের মা-সহ পাঁচ জনকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

আদালতে সরকারি আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত জানান, ধৃত পাঁচ অভিযুক্ত ৯০ দিন জেলে ছিলেন। পরে আইনমাফিক তাঁরা নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।

বিচারপতি পাথেরিয়া জানতে চান, ওই কিশোরীর খোঁজ পেতে পুলিশ কী করেছে? তাঁর প্রশ্ন, “পুলিশ বলছে, মূল অভিযুক্ত-সহ চার জন পলাতক। তাদের খোঁজ পেতে পুলিশ কি তাদের ছবি সংবাদমাধ্যম, রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, রাজ্যের অন্যান্য থানায় প্রচার করেছে?”

সরকারি আইনজীবী উত্তর দেন, “ওই কিশোরীর ছবি সব জায়গায় প্রচার করা হয়েছে।”

তাতে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, “কোনও নির্যাতিতার ছবি প্রকাশের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জেনেও পুলিশ কী ভাবে ওই কিশোরীর ছবি প্রকাশ করল?”

সরকারি আইনজীবী বলেন, “কিশোরীর খোঁজ মিলছে না। সে নিখোঁজ। তার খোঁজ পেতেই সর্বত্র তার ছবি প্রচার করা হয়েছে।”

বিচারপতি তা মেনে নিয়ে বলেন, “ওই ছবি প্রচারের পাশাপাশি অভিযুক্তদের হদিস পেতে তাদের ছবি প্রচার করা হল না কেন?”

সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, “আমরা ওই অভিযুক্তদের খুঁজে বার করব।”

বিচারপতির প্রশ্ন, “কবে? কত দিন লাগবে?”

সরকারি আইনজীবী অনুরোধ করেন, পুলিশকে আরও কিছু দিন সময় দেওয়া হোক।

বিচারপতির প্রশ্ন, “কত দিন সময় দিতে হবে?”

সরকারি আইনজীবী, “কুড়ি দিন।”

বিচারপতি বলেন, “পনেরো দিনের বেশি সময় দেওয়া যাবে না।”

সরকারি আইনজীবী এর পরে আদালতে জানান, অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের ঘটনায় কোনও কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ যখন আদালতে হাজির করাচ্ছে, তখন সেই কিশোরী তার অভিভাবকের কাছে ফিরে যেতে চাইছে না।

বিচারপতি জানান, ওই কিশোরী অভিভাবকের কাছে ফিরে যেতে না চাইলে তার জন্য সরকারি বা বেসরকারি হোম রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন