প্রচারে সুগত বসুর সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) বিদ্যুৎমন্ত্রী মনীশ গুপ্ত এবং যাদবপুরের পর্যবেক্ষক তথা আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিরোধীদের ‘বিদেশি-বহিরাগত’ তকমা খণ্ডন করে পাল্টা প্রচারে নামলেন যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুগত বসু।
সাংসদ নির্বাচিত হোন বা না হোন, যাদবপুর কেন্দ্রে আমৃত্যু জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান হার্ভার্ডের ইতিহাসের এই অধ্যাপক। প্রথম কর্মিসভায় এসে বুধবার সে কথা জানিয়েই সুগতবাবু বলেছেন, “আমি বিদেশে থাকি। বিদেশের কলেজে অধ্যাপনা করি। কিন্তু এখন থেকে আমৃত্যু যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করছি। যদি সাংসদ নির্বাচিত না-ও হই, এই কেন্দ্রের জনসেবার কাজে থাকব।”
তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই বিরোধী শিবির তো বটেই, দলের অন্দরেও সুগতবাবুকে সব সময় পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিদেশে অধ্যাপনা করে কী ভাবে কেন্দ্রের মানুষের কাছে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন, তা নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে অসন্তোষ শুনতে হয়েছে তৃণমূল নেতাদেরও। তার উপরে বিদায়ী সাংসদ কবীর সুমন গত তিন বছর ধরে এলাকার মানুষের সঙ্গে কেন যোগাযোগ রাখছেন না, তা নিয়েও ক্ষোভ শুনতে হয়েছে কর্মীদের। এ বার সেই কেন্দ্রেই সুগতবাবু জিতলে এলাকাবাসীর আরও সমস্যা বাড়তে পারে, এই দাবি তুলে তাঁকে ‘বিদেশি এবং বহিরাগত’ বলে প্রচার করছিল বামেরা। তারই জবাব দিতে বারুইপুরের রাসমাঠে কর্মিসভায় সুগতবাবুর পরামর্শ, “আমি যে এলাকায় থেকেই কাজ করতে চাই, তা আপনারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলবেন।”
নাম ঘোষণার প্রায় দু’সপ্তাহ পরে প্রথম প্রচারে নামলেন সুগতবাবু। অথচ সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী এই দু’সপ্তাহ ধরে অলিগলি ঘুরে প্রচারে ব্যস্ত। দলের বিদায়ী সাংসদের প্রতি এলাকাবাসীর মনোভাব এবং সিপিএমের জোরালো প্রচারে তাঁর লড়াইটা যে খুব সহজ নয়, তা পরোক্ষ ভাবে কর্মীদের বুঝিয়ে দেন সুগতবাবু। তাঁর পরামর্শ, “সিপিএমকে ছোট করে দেখবেন না। ওরা আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। তার পরে কংগ্রেস ও বিজেপি রয়েছে। সেই কারণে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আমাদের লড়তে হবে।” ওই কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন যাদবপুরের পর্যবেক্ষক তথা আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী মনীশ গুপ্ত প্রমুখ। রাজ্যে পরিবর্তনের পর থেকে বারুইপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী-বিবাদ চলছেই। সে কারণেই গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সুগতবাবুর জন্য প্রচারে কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের আবেদন করেন অরূপবাবু। কর্মিসভার পরে রাসমাঠ থেকে পদ্মপুকুর মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন সুগতবাবু।