লোকসভা ভোটের প্রচারে ফের রাজ্যে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যেই কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশ এবং শিলিগুড়িতে জনসভা করে গিয়েছেন তিনি। পরবর্তী পর্যায়ে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সফরসূচিতে আপাতত থাকছে উত্তরপাড়া ও আসানসোল। পরে আরও কিছু জায়গাও সংযোজন হতে পারে তালিকায়।
শ্রীরামপুর ও হুগলি আসনে এ বার বিজেপি-র হয়ে এমন দুই বাঙালি প্রার্থী লড়ছেন, যাঁদের পরিচিতি সর্বভারতীয় স্তরে। ওই দুই প্রার্থী বাপ্পি লাহিড়ী ও চন্দন মিত্রের সমর্থনেই রবিবার উত্তরপাড়ায় সমাবেশ করবেন মোদী। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী যাতে ওই এলাকায় প্রচারে আসেন, তার জন্য বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ চন্দনবাবু। উত্তরপাড়ায় সভা হলে সংলগ্ন হাওড়া কেন্দ্রের প্রার্থী জর্জ বেকারের সমর্থনে প্রচারও সেরে নেওয়া যাবে বলে বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা। তার পরে ৪ মে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী, গায়ক বাবুল সুপ্রিয়ের সমর্থনে সভা করতে আসার কথা মোদীর।
বস্তুত, উত্তরপাড়ার পরে আরও দুই বা তিন বার রাজ্যে প্রচারে আসার সম্ভাবনা আছে মোদীর। তবে কবে কোথায় সে সব সভা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ জানিয়েছেন। রাহুলবাবুর মতে, মোদী, রাজনাথ সিংহ, লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো শীর্ষ নেতাদের বারবার এ রাজ্যে প্রচারে আসা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এ বারের ভোটে পশ্চিমবঙ্গে দলের সম্ভাবনা যথেষ্ট বুঝেই এ রাজ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
বর্ধমান জেলা বিজেপি নেতৃত্ব বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, আসানসোলের নিঘা মাঠে ৪ তারিখ সভা করবেন তাঁদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। সমাবেশের নির্দিষ্ট সময় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাবুলের বক্তব্য, “আমার প্রচারে নরেন্দ্র মোদী আসছেন, এটা আমার পরম সৌভাগ্য!” মোদীর প্রস্তাবিত সভার ঠিক আগের দিন, ৩ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসানসোলে সভা করতে পারেন বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর। সে দিন টলিউডের এক ঝাঁক তারকাকেও প্রচারে নামানোর চেষ্টা হচ্ছে। তিনিও কি মুম্বই থেকে তারকা উড়িয়ে আনবেন? বাবুলের জবাব, “আমরা এখানে ফাংশন করতে আসিনি! ভোটটা লড়তে এসেছি। সেটা রাজনৈতিক ভাবেই লড়ব।” আর মোদীর ফের রাজ্য-সফরের খবরে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিচিত্র প্রতিক্রিয়া, “উনি বুঝেছেন এখানে কিছু হবে না। তাই বারবার আসছেন! এক বার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি!”
মোদী আসার আগে আগামী ১ ও ২ মে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের নানা এলাকায় যোগ শিবির করবেন বাবা রামদেব। পতঞ্জলি যোগ সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, ১ তারিখ কুলটির থানা মোড় মাঠে শিবির করার কথা রামদেবের। তার পরে সে দিনই সন্ধ্যায় বার্নপুর বয়েজ হাইস্কুল মাঠে শিবির করবেন। পর দিন ভোরে রূপনারায়ণপুর কেবল্স মাঠে, বিকেলে অন্ডালের উখড়া সার্কাস ময়দানে এবং সন্ধ্যায় রানিগঞ্জ রাজবাড়ি মাঠে তিনটি যোগ শিবির করতে পারেন তিনি। ওই যোগ সমিতি সূত্রের বক্তব্য, সরাসরি বিজেপি-র সমর্থনে এই শিবির নয়। তবে দুর্নীতিমুক্ত ভারত নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা, পরিবর্তন কেন প্রয়োজন, দেশের লুণ্ঠন ও সমূহ ক্ষতির জন্য দায়ী কারা, সে সব নিয়ে যোগ শিবিরগুলিতে আলোচনা হবে। রামদেবের শিবিরগুলিতে তিনি থাকবেন বলে জানিয়েছেন বাবুল। তাঁর কথায়, “রামদেব আমাকে স্নেহ করেন। নিজে যোগাভ্যাস করি। তাই আমি যাব।”