বিলে দ্রুত সই করার জন্য রাজ্যপালের কাছে তদ্বির করতে গেলেন মন্ত্রীরা। রাজভবন জানাল, সেই বিল তাদের কাছে পৌঁছয়ইনি! বিড়ম্বনা এড়াতে আর ওই নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য হল না!
মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে শুক্রবার রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মণীশ গুপ্ত, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও শশী পাঁজা। মন্ত্রী মদন মিত্রকে যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরাই ‘রাজভবন অভিযানে’র মূল উদ্দেশ্য ছিল। সরকারি সূত্রের খবর, আলোচনার মধ্যেই কিছু বিলের প্রসঙ্গ আসে। পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে নতুন বোর্ড আসার আড়াই বছরের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না বলে একটি বিল পাশ হয়েছে গত মাসে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে। রাজ্যপাল সই করলে তবেই সেই বিল আইন হিসাবে কার্যকর হবে। এখনও বিলে সই না হওয়ায় জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব এনে পঞ্চায়েত দখলের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এই প্রেক্ষিত মাথায় রেখেই এ দিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রতবাবু রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানান, ওই বিলে তিনি দ্রুত সই করে দিলে ভাল হয়। এবং তখনই সামনে আসে সরকারের পক্ষে বিড়ম্বনার তথ্য! রাজ্যপাল জানান, এমন কোনও বিল তাঁর সম্মতির জন্য আসেনি। বিল না এলে তিনি সই করবেন কী ভাবে? বিষয়টি অস্বস্তিকর দিকে যাচ্ছে দেখে তখন আর কথা বাড়াননি মন্ত্রীরা। রাজভবন থেকে বেরিয়েই তাঁরা খোঁজ শুরু করেন বিধানসভায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার সচিবালয় থেকে খোঁজ নিয়ে তাঁদের জানান, পদ্ধতি মেনেই বিলটি ফাইল করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যপালের সম্মতির জন্য। প্রশ্ন ওঠে, বিধানসভায় নেই। রাজভবনে নেই। বিল তা হলে গেল কোথায়? বিধানসভার এক আধিকারিকের বক্তব্য, “বিলটি বেশি দিন আগে পাশ হয়নি। পদ্ধতি মেনে যে ভাবে বিল পাঠানো হয়, এখানেও তা-ই হয়েছে। তাতে কয়েক দিন সময় লাগে। বিলটি তার মানে এখন সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।”
সেই প্রক্রিয়ার মাঝেই রাজ্যপালের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে ফেলার বিড়ম্বনা নিয়ে পরে আর বাইরে মুখ খোলেননি মন্ত্রীরা। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু রাজভবনের আলোচনায় ছিলেন। বেরিয়ে তিনি বলেন, “কয়েকটি বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আর বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় ক্ষুদ্র আমানতকারীদের নিরাপত্তা দিতে চেয়ে যে বিল আমরা পাশ করেছিলাম, কেন্দ্রীয় সরকার যাতে তা ছেড়ে দেয়, তার জন্য রাজ্যপালকে তৎপর করতে অনুরোধ জানিয়েছি।” আর পঞ্চায়েতমন্ত্রী খোঁজখবর নিতে শুরু করেন বিধানসভায়।