বুধবার সল্টলেকের বাড়িতে রমলা চক্রবর্তী। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফল বেরোনো বাকি, কিন্তু শুক্রবার দুপুর থেকেই রমলা চক্রবর্তী জয়ের হাসি হাসছেন! উচ্ছ্বসিত হয়ে জানাচ্ছেন, পুনর্নির্বাচনে ভোট না-দিয়েই শুক্রবার সল্টলেকের মানুষ নাকি তাঁদের জিতিয়ে দিয়েছেন। রায় দিয়েছেন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
এই রমলা-ই ৩ অক্টোবর ভোটের দিনে যখন যেখানে গিয়েছেন, প্রকাশ্যে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের কটাক্ষ শুনতে হয়েছে তাঁকে—‘‘সুভাষ-রমলা চক্রবর্তীদের ভোট-ফর্মুলাই আমরা ফেরত দিচ্ছি। ওঁরা যেখান থেকে যে ভাবে লোক আনতেন, আমরাও এনেছি।’’ আর শুক্রবার নিজের ঘরে টেলিভিশনে ভোটের অবস্থা দেখে উজ্জ্বল হয়ে ওঠা মুখে সুভাষ-জায়ার মন্তব্য, ‘‘সুভাষবাবুর কাজ আর কথার যে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছিল— মানুষ আজ ভোট বয়কট করে তা বুঝিয়ে দিলেন। আর জেতা-হারায় কিছু যায় আসে না।’’
প্রত্যেক দিনের মতোই সকাল ৬টায় দিন শুরু হয়েছিল পাড়ার ‘মণি-মা’-র। এই নামেই তিনি পরিচিত। ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত তো দলের থেকে আগেই নেওয়া হয়েছিল, তাই প্রথমে ভেবেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা মিটিংয়ে বেরিয়ে যাবেন। ‘‘১০টা থেকে মিটিং ছিল। তার পর ভাবলাম, আমার ওয়ার্ডে দু’টো বুথে পুনর্নির্বাচন রয়েছে। এই সময় এলাকা ছেড়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। বাড়িতেই থাকব।’’ ঘণ্টাখানেক পর-পর বুথের অবস্থার চোখে দেখা বিবরণ তাঁকে শুনিয়ে যাচ্ছেন দলীয় কর্মীরা। পাঁচটা বাজতেই জানা গেল, একটি বুথে ৭৬টি ভোট পড়েছে, অন্যটিতে ৯০টি। রমলা-র মুখে অদ্ভুত প্রশান্তি, ‘‘আমরা কাউকে বাধা দিইনি ভোট দিতে, কিন্তু অবস্থা দেখুন! ভোটই তো পড়ছে না! শুধু বাম কর্মীরা ভোট বয়কট করলে এটা হয় না। এটা ৩ অক্টোবরের ঘটনার বিরুদ্ধে সল্টলেকের মানুষের সার্বিক প্রতিরোধ। এ আমাদের জয়। আজ সুভাষবাবু থাকলে...।’’