‘ভাল’ আম কিনতে হাত পুড়ছে আমজনতার

আমের ভরা মরসুমেই অমিল হিমসাগর। যেটুকু মিলছে, তার দাম অন্য বারের তুলনায় দ্বিগুণ বা আরও বেশি। সব মিলিয়ে এ বার জামাইষষ্ঠীতে জামাইয়ের পাতেও কতটা আমের জোগান দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয়ে ফল বিক্রেতারা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০৩:১৩
Share:

আমের ভরা মরসুমেই অমিল হিমসাগর। যেটুকু মিলছে, তার দাম অন্য বারের তুলনায় দ্বিগুণ বা আরও বেশি। সব মিলিয়ে এ বার জামাইষষ্ঠীতে জামাইয়ের পাতেও কতটা আমের জোগান দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয়ে ফল বিক্রেতারা। কলকাতার বিভিন্ন বাজারের ফল বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, অন্য বারের তুলনায় এ বার হিমসাগরের জোগান অর্ধেকেরও কম।

Advertisement

ফল বিক্রেতারা আরও জানাচ্ছেন, অন্য বার হিমসাগর আমের দাম মান অনুযায়ী ৩০ থেকে ৬০ টাকা কেজির মধ্যে ঘোরাফেরা করে, এ বছর তা শুরুই হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে। ভাল মানের হিমসাগর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। মেছুয়া বাজারের ফ্রুট মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি শাহিদ আহমেদ খান বলেন, “এ বারের আবহাওয়া ভাল মানের হিমসাগর হওয়ার প্রতিকূল ছিল। ফলে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে শুরু করে নদিয়া এমনকী মালদহ থেকেও হিমসাগরের জোগান এসেছে খুবই কম।”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য-প্রক্রিয়াকরণ ও জৈব রাসায়নিক বিভাগের প্রধান উৎপল রায়চৌধুরী বলেন, “শীতকালে ভাল মুকুল হওয়ার জন্য যে পরিমাণ রোদ দরকার ছিল তা মেলেনি। ফলে পরাগরেণু সংযোজন ভাল না হওয়ায় মুকুলও সে ভাবে ধরেনি। এর পরে মার্চ-এপ্রিলে বৃষ্টি প্রায় হয়নি বললেই চলে। ফলে মুকুলের বৃদ্ধিও ভাল ভাবে হয়নি।” বিশেষজ্ঞদের মতে এ বার এমনিতেই আমের ফলন কম হওয়ার কথা ছিল। কারণ গত বছর ফলন হয়েছিল খুবই ভাল। নিয়ম অনুযায়ী এক বছর আমের ভাল ফলন হলে পরের বছর তা কম হওয়ার কথা। উৎপলবাবুর মতে, “প্রকৃতির মধ্যেও একটা স্পন্দন থাকে। মানুষের হৃদ্স্পন্দনের মতো এটিও কমে-বাড়ে। গত বছর স্পন্দন বেশি থাকায় আমের ফলন ভাল হয়েছিল। কিন্তু এই বছর স্পন্দন কম।” বিশেষজ্ঞেরা আরও জানাচ্ছেন, আমের ভাল ফলনের জন্য যে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় সেই সারের ক্ষমতা এতটাই বেশি থাকে যে গাছের ফলন বেশি হয় ঠিকই কিন্তু তা গাছকে কিছুটা দুর্বল করে দেয়। তাই এক বছর ভাল ফলন হলে পরের বছর সেই গাছের ফলন কমে যায়।

Advertisement

ফলন কম হলেও এতটা কম হবে ভাবতে পারেননি ফল বিক্রেতারা। নিউ মার্কেটের এক বিক্রেতা জানালেন, “এখনও বাজারে ল্যাংড়া সে ভাবে আসেনি। ভাল মানের আলফাঁসো বাজারে কার্যত নেই। যেটুকু আছে তার দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এই সময়ে জামাইষষ্ঠীর বাজারে সাধারণত হিমসাগরের চাহিদা থাকে সব থেকে বেশি।” কিন্তু জোগান এতই কম যে জামাইষষ্ঠীতে সাধারণ মধ্যবিত্তের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন তা নিয়েই ধন্দে ফল বিক্রেতারা। বাগুইআটি বাজারের এক ফল বিক্রেতা কমল সাহা বললেন, “জামাইষষ্ঠীর আগে এই নিম্নচাপের বৃষ্টিতে হিমসাগরের জোগান আরও কমবে। বৃষ্টির আবহাওয়ায় আম পাকতে অসুবিধা হয়। তাই আগামী দু’একদিনের মধ্যে হিমসাগরের জোগান বাড়ার আশাও নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন