মাওবাদী যোগ প্রমাণে বিমানকে চ্যালেঞ্জ

বামফ্রন্টের দুঃসময়ে শরিকি বিবাদ এড়াতে চাইছেন সিপিএমের রাজ্য নেতাদের একাংশ। কিন্তু মাওবাদী নুনের ছিটে ভুলতে পারছে না ফরওয়ার্ড ব্লক। ক’দিন আগে পুরুলিয়ায় সিপিএমের জেলা সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে ফব কর্মীদের একাংশের মাওবাদী আঁতাঁতের যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তাতেই অশান্তির সূত্রপাত হয়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের হস্তক্ষেপে পরে ওই অংশটি প্রতিবেদন থেকে বাদ দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৪
Share:

বামফ্রন্টের দুঃসময়ে শরিকি বিবাদ এড়াতে চাইছেন সিপিএমের রাজ্য নেতাদের একাংশ। কিন্তু মাওবাদী নুনের ছিটে ভুলতে পারছে না ফরওয়ার্ড ব্লক।

Advertisement

ক’দিন আগে পুরুলিয়ায় সিপিএমের জেলা সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে ফব কর্মীদের একাংশের মাওবাদী আঁতাঁতের যে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তাতেই অশান্তির সূত্রপাত হয়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের হস্তক্ষেপে পরে ওই অংশটি প্রতিবেদন থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু শনিবার ফব-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনে এসে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ করলেন দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জয়ন্তবাবু বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মীরা না কি মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে খুন করেছে। ভাবা যায়? বামফ্রন্টের বড় শরিকের জেলা সম্মেলনের প্রতিবেদনে এ কথা বলা রাজনৈতিক অপরাধ না কি অপরাধ নয়, বিমান বসুকে জবাব দিতে হবে।” ঘটনাচক্রে আজ, রবিবারই মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে আসার কথা বিমানবাবুর। তার আগে এই চ্যালেঞ্জে অশান্তির পরিস্থিতি ফের উসকে উঠল বলে সিপিএমের অনেকেই মনে করছেন।

Advertisement

পুরুলিয়ায় সিপিএমের সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদন পেশ হওয়ার পর থেকেই দুই বাম শরিকে চাপানউতোর চলছে। ইতিমধ্যে বিমানবাবুকে চিঠি দিয়ে ফব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ জানিয়েছেন, সিপিএমের তরফে দুঃখপ্রকাশ করা না হলে তাঁরা কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবেন। এর পরে দিনহাটা-কাণ্ড নিয়েও সিপিএমের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় ফব। ২০০৮-র ৫ ফেব্রুয়ারি দিনহাটায় ‘আইন অমান্য’ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ৫ জন ফব কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। ওই গুলিচালনার জন্য সিপিএম নেতৃত্বকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে এ বার ‘শহিদ দিবস’ অনুষ্ঠানে দাবি করেন ফব নেতৃত্ব। পরে অবশ্য সুর নরম করে দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, ওই ঘটনায় সিপিএমের প্ররোচনা ছিল না।

এ দিন ফব-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনে জয়ন্তবাবু ছাড়াও ছিলেন দলের আর এক কেন্দ্রীয় নেতা হাফিজ আলম সৈরানি, রাজ্য নেতা নিশিকান্ত মেহতা প্রমুখ। জয়ন্তবাবুর আক্ষেপ, রাজ্যে পালাবদলের পরে জনগণের পাশে থেকে যে আন্দোলন করা উচিত ছিল, তা বামফ্রন্ট করতে পারেনি। উল্টে বড় শরিক সিপিএম এখন মাওবাদী-আঁতাঁতের অভিযোগ তোলায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। ওই অভিযোগ ‘একেবারে দায়িত্বজ্ঞানহীন’ দাবি করে জয়ন্তবাবুর চ্যালেঞ্জ, “আলিমুদ্দিনের কর্তারা সব বসুন। তথ্য প্রমাণ নিয়ে এক জায়গায় আসুন। কথাটা কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যা প্রমাণ করুন।” সূর্যবাবু অবশ্য বলেন, “পুরুলিয়ার সম্মেলনে প্রতিবেদনের ওই অংশটি গৃহীত হয়নি। বিষয়টি মেনেও নিচ্ছি না। ফলে, এ নিয়ে বিতর্কের আর কোনও অবকাশ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন