মদনের উৎকণ্ঠা রোগে বেকায়দায় পুজো উদ্যোক্তারা

মন্ত্রীরা সাবধান, রাজা আসছে। এমনই হুঙ্কার দিয়ে দুর্গাপুজোর লড়াইয়ে নেমেছিল ভবানীপুর অগ্রদূত সঙ্ঘ। যা পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের পুজো বলেই পরিচিত। কিন্তু পুজোর ঠিক আগে আচমকা ‘রাজা’ নিজেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। মাথায় হাত পড়েছে অগ্রদূত সঙ্ঘের উদ্যোক্তাদের। শুধু কি অগ্রদূত সংঘ। ভবানীপুর এবং কামারহাটি-দক্ষিণেশ্বর এলাকায় গোটা দশের বেশি পুজো কমিটির সভাপতি মদন মিত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১০
Share:

মন্ত্রীরা সাবধান, রাজা আসছে। এমনই হুঙ্কার দিয়ে দুর্গাপুজোর লড়াইয়ে নেমেছিল ভবানীপুর অগ্রদূত সঙ্ঘ। যা পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের পুজো বলেই পরিচিত। কিন্তু পুজোর ঠিক আগে আচমকা ‘রাজা’ নিজেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। মাথায় হাত পড়েছে অগ্রদূত সঙ্ঘের উদ্যোক্তাদের।

Advertisement

শুধু কি অগ্রদূত সংঘ। ভবানীপুর এবং কামারহাটি-দক্ষিণেশ্বর এলাকায় গোটা দশের বেশি পুজো কমিটির সভাপতি মদন মিত্র। এর বেশির ভাগ পুজোই শুধু খাতায়-কলমে নয়, বাস্তবেও মন্ত্রীর ‘হাতযশ’-এর উপরে নির্ভরশীল। আচমকা মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই সব পুজোর উদ্যোক্তারাও খানিকটা বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন। অনেক মাঝারি ও ছোট পুজো উদ্যোক্তা আবার মদন মিত্রকে দিয়ে পুজো উদ্বোধন করার কথা ভেবেছিলেন। বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন তাঁরাও।

শনিবার থেকে কলকাতার বেশির ভাগ পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন শুরু হয়ে গিয়েছে। শনিবার সন্ধে থেকে ঠাকুর দেখতেও বেরিয়ে পড়েছেন কেউ কেউ। তার ঠিক আগে শ্বাসকষ্ট, অম্বল, অনিদ্রা, বুক ধড়ফড় এবং পেট ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে শনিবার দুপুরে পরিবহণমন্ত্রী কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরিস্থিতি যা, তাতে আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকে মন্ত্রীর ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

তবে একই সঙ্গে মদনবাবুর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা অভিজ্ঞান মাজি জানাচ্ছেন, রবিবার অনেকটাই ভাল আছেন মন্ত্রী। শনিবার তাঁকে হাল্কা ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তাতে রাতে ভাল ঘুম হয়েছে মদনবাবুর। আর তাতেই বেশ খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। এমনকী, রবিবার মদনবাবুর রক্তচাপ কমে ১৭০/৯০ থেকে ১৪০/৭০ হয়েছে।

শনিবারই চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হয়েছে মন্ত্রীর। কোনও কারণে প্রবল উৎকণ্ঠার কারণে মন্ত্রীর ঘুম প্রায় উবে গিয়েছিল। শুরু হয়ে গিয়েছিল শ্বাসকষ্টও। আর এতেই যত বিপত্তি হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। ফলে, ‘প্যানিক অ্যাটাক’ থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশ্রামের উপরে। তাঁরা মন্ত্রীকে আগামী তিন-চার দিন পুরোপুরি বিশ্রামে থাকারই পরামর্শ দিয়েছেন। আর এতেই মাথায় হাত পড়েছে বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের। পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে মন্ত্রীর দুর্গাষ্টমীর আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে পুজোর নানা খুঁটিনাটি কী করে সামাল দেবেন, তা নিয়ে মাথায় হাত ওই সব উদ্যোক্তাদের।

তবে প্রকাশ্যে অবশ্য অসুবিধের কথা মানতে চাইছেন না মদন-ঘনিষ্ঠ পুজো-উদ্যোক্তারা। মদনবাবু মাথায় রয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতার এমন একটি নামী পুজোর উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, “মদনবাবু অনেক আগে থেকেই পুজোয় যা সাহায্য করার, তা করে দেন। এখন হাসপাতাল থেকেও ফোনে খোঁজখবর নিচ্ছেন। তাই কোনও অসুবিধে নেই। তবে যাঁরা ওঁকে দিয়ে উদ্বোধন করাবেন ভেবেছিলেন, তাঁরা একটু অসুবিধেয় পড়লেন। কী আর করা যাবে! আমরা আশা করব, দ্রুত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন তিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন