মমতার রাজ্যে মেয়েদের অবস্থায় কটাক্ষ অধীরের

রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডের মোহনার দোতলায় মুর্শিদাবাদ জেলা মহিলা কংগ্রেসের সম্মেলনে হাজির হয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “দু’জনেই মহিলা। এক জন পুলিশমন্ত্রী। এক জন আইনমন্ত্রী। এক জন বলছেনএটা পুলিশের দেখার দরকার। অন্য জন বলছেন, এটা বিচার ব্যবস্থার দেখার দরকার। মাঝখান থেকে রাজ্যে মহিলাদের উপরে যে বিচার হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:৪০
Share:

দিনভর কর্মিসভার ফাঁকে চোখেমুখে একটু জল। রবিবার অধীর চৌধুরী।

পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্ত্বেও মেয়েদের বিচার পেতে দেরি হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

রবিবার সকালে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডের মোহনার দোতলায় মুর্শিদাবাদ জেলা মহিলা কংগ্রেসের সম্মেলনে হাজির হয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “দু’জনেই মহিলা। এক জন পুলিশমন্ত্রী। এক জন আইনমন্ত্রী। এক জন বলছেনএটা পুলিশের দেখার দরকার। অন্য জন বলছেন, এটা বিচার ব্যবস্থার দেখার দরকার। মাঝখান থেকে রাজ্যে মহিলাদের উপরে যে বিচার হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না।”

শুক্রবার মুম্বইয়ের শক্তি মিলস গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত চার জনের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেছে মুম্বইয়ের আদালত। সময় লেগেছে ৭ মাস ২১ দিন। ওই শক্তি মিলস চত্বরেই আরও একটি গণধর্ষণের ঘটনায় চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে আদালত সময় নিয়েছে ৬ মাস ২৫ দিন। সেই নিরিখে এ রাজ্যে পার্ক স্ট্রিট, কামদুনির মতো ঘটনায় বছর গড়িয়ে গেলেও বিচার না মেলায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।

Advertisement

শনিবার কালীঘাটে নিজের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন “একটা কোর্ট থেকে মামলা আর একটা কোর্টে নিয়ে গেলে সময় তো লাগবেই।” এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী কামদুনির কথা বলতে চাইলেও বাকি মামলাগুলি দেরি হচ্ছে কেন, তার ব্যাখ্যা মেলেনি।

সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “মহারাষ্ট্রে গণধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হলেও এই রাজ্যে তা হচ্ছে না। এর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা হওয়া সত্ত্বেও মহিলাদের দুরবস্থার জন্য তাঁর দুশ্চিন্তা হয় না। সবচেয়ে অবাক লাগে, মহিলাদের উপরে অত্যাচার হলে সেটাকে ঠেকানোর তিনি চেষ্টা করেন না। তিনি সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করার চেষ্টায় মাঠে নেমে পড়েন। এটা লজ্জার।”

মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও নিশানা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। অধীর বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী, তিনিও এক জন মহিলা। ওই মহিলা আবার বলছেনসাজা হচ্ছে না তার কারণ এটা স্বরাষ্ট্র দফতরের ব্যাপার। পুলিশের দেখার ব্যাপার। স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী কে? তিনি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।” প্রতিক্রিয়া চাইলে চন্দ্রিমাদেবী পাল্টা বলেন, “খুনের মামলায় অভিযুক্ত, এখন জামিনে মুক্ত এমন এক জনের কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না।”

এ দিকে, রাজ্যে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় শীর্ষে মুর্শিদাবাদ জেলা। সেই দায় কি দীর্ঘ দিনের সাংসদ অধীরবাবুর উপরেও বর্তায় না? সাংসদের প্রতিক্রিয়া, “বিষয়টা আইন-শৃঙ্খলার। সেটা দেখতে হবে রাজ্য সরকারকেই। আমাদের জেলায় রানিতলা, খোরজুনার ঘটনায় দ্রুত বিচার চেয়ে বিভিন্ন মহলে দরবার করেছি। রাষ্ট্রপতিকেও চিঠি দিয়েছি। এর বেশি কী করব? শিক্ষা, সচেতনতা বাড়ানোর কাজগুলো রাজ্যকেই করতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement