মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যখন বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক লাইন নিচ্ছে, ঠিক সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসে চলছে এক চূড়ান্ত অন্তর্কলহের ঝড়। রাজ্য সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সদ্য নিযুক্ত যুব কংগ্রেসের নবীন রাজ্য সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্যর সংঘাত এখন চিঠি ও পাল্টা চিঠির রাজনীতিতে পর্যবসিত। কাল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির বৈঠক। তার আগে রাজধানীতেও এসে আছড়ে পড়েছে সেই পত্রবোমা। পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সি পি জোশীর কাছে চিঠির প্রতিলিপি এসেছে। হাইকম্যান্ড এই বিতর্ক মেটাতে তৎপর।
২২ সেপ্টেম্বর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এক চিঠি দিয়ে যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছ থেকে জানতে চান, তিনি কেন ১৯ সেপ্টেম্বর শহিদ মিনারে সারদা কাণ্ড নিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে আসেননি। এই অনুপস্থিতিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যে ভাল চোখে দেখেননি, তা বুঝিয়ে দিয়ে অধীরবাবু যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছ থেকে এর ব্যাখ্যা চান। ১০ অক্টোবর অরিন্দমবাবু চিঠি দিয়ে জানান, তিনি দিল্লিতে যুব কংগ্রেসের আক্রোশ সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এই সমাবেশ ডেকেছিলেন রাহুল গাঁধী।
আর একটি বিষয় হল অরিন্দমবাবু ১৯ সেপ্টেম্বরের সমাবেশে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ বা চিঠি প্রদেশ কংগ্রেসের থেকে পাননি। অধীরবাবুর চিঠিটি যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছে পাঠান প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদিকা মায়া ঘোষ। চিঠিতে অরিন্দম সরাসরি প্রদেশ সভাপতিকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, আর্থিক অনটনের মধ্যে যুব কংগ্রেস কাজ করছে। তা সত্ত্বেও জেলাওয়াড়ি কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। এর পরেও প্রদেশ সভাপতির থেকে এমন চিঠি তাঁর বিস্ময়কর ঠেকেছে।
আসলে অধীর প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর রাজ্য নেতারা অনেকেই ক্ষুব্ধ। মানস ভুঁইয়া, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবদুল মান্নান প্রমুখ নেতারা যে ভাবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব চলছেন, তাতে হাইকম্যান্ডের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দীপা দাসমুন্সির মতো নেত্রী এতটাই ‘ব্যথিত’ যে তিনি নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছেন। আবার অধীরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে হাতে হাত না মিলিয়ে রাজ্য নেতারা উল্টে অসহযোগিতা করছেন। ফলে মমতা সরকার বিরোধী যে জনমত রাজ্যে তৈরি হচ্ছে, তার ফায়দা অনেকটাই বিজেপি নিয়ে নিচ্ছে। কংগ্রেস নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্র বলছে, কাল অধীরবাবু বৈঠক ডেকে সকলের মতামত নিয়ে এই বিতর্ক নিরসনে উদ্যোগী হবেন।